আর জি কর-কাণ্ডের পটভূমিতে দুই ছাত্র নেতানেত্রী স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি তৈরি করায় তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু তার পরেও বিতর্ক থামছে না। এক দিকে, তৃণমূলকে যেমন এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে। তেমনই দলের নেতা কুণাল ঘোষের গান লেখা বা সাংসদ দীপক অধিকারীর ‘প্রধান’ সিনেমা বানানোর আগে তাঁরা দলকে জানিয়েছিলেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শাস্তিপ্রাপ্ত নেত্রী রাজন্যা হালদার।
যে ছবিটি নিয়ে বিতর্ক, তাতে অভিনয় করেছেন রাজন্যা। পরিচালনায়, শাস্তিপ্রাপ্ত নেতা প্রান্তিক চক্রবর্তী। ছবিটির পোস্টার ও সেটির একটি ক্লিপিং সামনে আসতেই দু’জনকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যায় কুণাল শনিবার বলেছেন, “আর জি কর ও তিলোত্তমা’র নামে যে ফুটেজ সামনে এসেছে, তা নিয়ে দলের আপত্তি রয়েছে। এটা পক্ষে বা বিপক্ষের বিষয় নয়। যে দৃশ্য সামনে এসেছে তা এই গুরুতর ঘটনার তদন্ত চলাকালীন করা যায় না। তাই দল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে।”
তবে পাল্টা রাজন্যার বক্তব্য, “এই সময়ে দাঁড়িয়ে শর্ট ফিল্মের ভাবনাটি প্রাসঙ্গিক। কুণাল দা যখন পুজোর জন্য তিনটি গান লিখেছিলেন, দেব দা যখন ‘প্রধান’ বানিয়েছিলেন, সেগুলো কি দলকে জানিয়ে করা হয়েছিল? আমার মনে হয় না।” যদিও, রাজন্যার বক্তব্য প্রসঙ্গে কুণালের যুক্তি, “সে গান ‘কন্যাশ্রী’, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ নিয়ে গাওয়া।” এই পরিস্থিতিতে প্রান্তিকের ‘বিশ্বাস’, তাঁদের ছবিটি দেখে দল সাসপেন্ডের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে।
এই পরিস্থিতিতে শিল্পীর স্বাধীনতার সূত্র ধরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। তাদের তরফে রঞ্জিত শূরের বক্তব্য, “নিজেদের সংগঠনে তৃণমূল কাকে রাখবে না রাখবে, সেটা তাদের ব্যপার। সিনেমা একটা শিল্পকর্ম। এঁদের সাসপেন্ড করে আসলে শিল্পী-সাহিত্যিকদের ‘তিলোত্তমা-কাণ্ড’ থেকে দূরে থাকার হুমকি দেওয়া হল।” কার্যত একই সুরে রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যেরও কটাক্ষ, “তৃণমূল যে কোনও মূল্যে আর জি করের ঘটনা থেকে মানুষের নজর ঘোরাতে চায়। ওঁরা (রাজন্যা ও প্রান্তিক) সেটা বোঝেননি। তাই কোপ পড়ল।”