• ছিল সেচ দপ্তরের অফিস, রাতারাতি হলো ঘাটাল থানা!
    এই সময় | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, মেদিনীপুর: মহকুমা সেচ দপ্তরের অফিস ‘জোর’ করে দখল করার অভিযোগ উঠেছে ঘাটাল থানার পুলিশের বিরুদ্ধে। ঘাটাল মহকুমা সেচ দপ্তরের আধিকারিক এই সমস্যর কথা বিস্তারিত জানিয়ে শুক্রবার জেলার এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘ঘাটাল থানা কর্তৃপক্ষ সেচ দপ্তরের অফিসটি জোর করে নিজেদের দখলে নিয়েছেন। মহকুমা সেচ আধিকারিকের নেমপ্লেট খুলে ঘাটাল থানার অফিসার ইন-চার্জ-এর নেমপ্লেট লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন মহকুমা সেচ অফিসের পুরো এলাকা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ওই অফিসে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের মূল্যবান নথি রয়েছে। সেচ দপ্তরের এসডিওকে কোয়ার্টার ছেড়ে দেওয়ার জন্য একজন পুলিশ আধিকারিক(এসআই) হুমকি দিয়েছেন!’এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেছেন মহকুমা সেচ আধিকারিক উজ্জ্বল মাখাল। এ দিন ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘যা জানানোর আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমকে কিছু বলতে পারব না। কিছু জানার থাকলে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা বলে জেনে নিন।’

    জেলার সেচ দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ইন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘সংবাদ মাধ্যমকে কিছু বলার এক্তিয়ার আমাদের নেই। যা বলার আমাদের দপ্তরের সচিব বলবেন।’ পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘চিঠির বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে বন্যার জলে ঘাটাল থানা ডুবে যাওয়ার পরে থানাকে শিফট করার জন্য আমরা সেচ দপ্তরের সচিবকে চিঠি দিয়েছিলাম। সেখান থেকে অনুমতি পাওয়ার পরে অস্থায়ী ভাবে থানা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখানে জোর করে দখল, চিঠিচাপাটির কী আছে আমি জানি না।’

    ফি বছর বন্যা হলেই ডুবে যায় ঘাটাল থানা। বাধ্য হয়ে থানাকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হয় অন্যত্র। কোনও বছর হোটেল, আবার কখনও ভাড়া বাড়িতে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে থানার কাজকর্ম পরিচালনা হয়। এ বছর ডিভিসি থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়ায় ঘাটালের বেশিরভাগ এলাকা ডুবে গিয়েছে। জলের তলায় চলে গিয়েছে গোটা থানা এলাকা।

    সূত্রের খবর, এ বার হোটেল বা কারও বাড়ি খালি না থাকায় সেচ দপ্তরের ওই অফিসে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশকর্মীদের। অস্থায়ী ভাবে ওখান থেকেই থানার কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘বন্যায় গোটা ঘাটাল থানা জলমগ্ন। জল কিছুটা কমলেও গোটা থানা চত্বর এখনও শর্ট সার্কিট হয়ে রয়েছে। থানার মধ্যে সাপ ঢুকে রয়েছে। বন্যার কারণে হেলে পড়েছে একটি বিল্ডিংও। এই মুহূর্তে পরিস্থিতি এমন যে ওখানে থাকা বা থানার কাজ পরিচালনা করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। তাই দুর্গত মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার জন্য অস্থায়ী ভাবে ওখান থেকেই কাজ করা হচ্ছে।’

    ঘাটালের কুশপাতা ও কোন্নগর এলাকায় সেচ দপ্তরের আরও দু’টি অফিস রয়েছে। ঘাটাল মহকুমা সেচ দপ্তরের অফিস পুলিশ ব্যবহার করার পরে জনা পাঁচেক কর্মী আসছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, ‘পুলিশ প্রতি বার বন্যার সময়ে থানা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বন্যা হলেও পুলিশকে তো প্রয়োজন।’
  • Link to this news (এই সময়)