গত কয়েকদিন ধরে একনাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছিল জলপাইগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। প্রচুর বৃষ্টির জেরে পাহাড়ে ধস, তিস্তায় বন্যা হয়। বানভাসি হয় অনেক পরিবার। কিন্তু রবিবার সকালে দুর্যোগ কাটিয়ে রোদ উঠেছে। আর এরপর তিস্তাপারে নীল আকাশ ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছে শায়িত বুদ্ধ (কাঞ্চনজঙ্ঘা)।
এদিকে, জল ছাড়ার পরিমাণ কিছুটা কমে সকাল ১১ টায়। জলপাইগুড়ি গজলডোবা ব্যারেজ তিস্তা নদীতে ২৪১৭ কিউমেক জল ছাড়ার খবর রয়েছে। তবে লাল সতর্কতা অব্যাহত দোমহানি মেখলিগঞ্জ, মেখলিগঞ্জ বাংলাদেশ বর্ডার এবং এনএইচ ৩১ জল ঢাকা মাথাভাঙা পর্যন্ত অসংগঠিত এলাকায়। সংরক্ষিত এলাকায় জারি রয়েছে হলুদ সতর্কতা বলে জলপাইগুড়ি সেচ দফতর ফ্লাড কন্ট্রোল সূত্রে রবিবার দুপুর ১২ টার পর জানা যায়।
তিস্তায় জল বাড়ায় জেলা প্রশাসনের তরফে তিস্তা নদী-সংলগ্ন এলাকায় রাতেই সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং করে প্রচার হল জেলা জুড়েই । নদীপাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে আসার আবেদনও জানানো হল। জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে তিস্তা নদী-সংলগ্ন এলাকায় পুলিস এবং পুরসভা ও ব্লক প্রশাসনের তরফে মাইকিং করে সচেতনতা প্রচারকাজ চলছে জোরকদমে।
তিস্তায় জল বাড়ায় চিন্তা নানা মহলে! জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা তৎপর। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শুক্রবার রাতেই জলপাইগুড়ি সদর মহকুমা শাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী ও সদর বিডিও মিহির কর্মকার-সহ অন্যান্য আধিকারিক কর্মীরা গভীর রাতে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের নন্দনপুর বোয়ালমারি তিস্তা নদী-এলাকায় পরিদর্শন করে মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেন। রয়েছেন ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের কর্মীরা।
জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ বিধানসভার অন্তর্গত গজলডোবার টাকিমারিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের চারজনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছে খোঁজখবর নেন। শনিবার শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব একালায় আসার কথা রয়েছে বলে জানা যায়।
আজ, শনিবার যত বেলা বেড়েছে লাগাতার বৃষ্টিতে ক্রমশ ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে তিস্তা নদী। ডুয়ার্সের মাল, ক্রান্তি থেকে শুরু করে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত ফুলে-ফেঁপে উঠেছে খরস্রোতা তিস্তা। বাংলাদেশ সীমান্তের মেখলিগঞ্জের অসংরক্ষিত এলাকায়-এলাকায় ইতিমধ্যেই লাল সংকত জারি করা হয়েছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয়েছে এনডিআরএফবাহিনী। পাহাড়ে টানা বৃষ্টির জেরে তিস্তা নদীর জল ভয়ংকরভাবে বেড়ে গিয়েছে। তিস্তায় জল বাড়ায় চিন্তা বেড়েছে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের নন্দনপুর বোয়ালমারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসন সর্বোচ্চভাবে প্রস্তুত। যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রস্তুত রয়েছে প্রশাসন। শুক্রবার রাত দশটা নাগাদ নন্দনপুর বোয়ালমারি এলাকায় পরিদর্শন করেন জলপাইগুড়ি সদর মহকুমা শাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী ও সদর বিডিও মিহির কর্মকার-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। জানা যাচ্ছে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের নন্দনপুর বোয়ালমারি এলাকায় তিস্তা নদীর জল ক্রমশই বাড়ছে। গজলডোবার তিস্তা ব্যারেজ থেকে দফায় দফায় জল ছাড়া হচ্ছে। এজন্য তিস্তা নদীর জলস্তর অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। জলপাইগুড়ির সেচ দফতরসূত্রে জানা গিয়েছে, মেখলিগঞ্জ থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সংকেত জারি করা হয়েছে। এছাড়া ময়নাগুড়ির দোমোহনি থেকে মেখলিগঞ্জ সীমান্ত পর্যন্ত তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় জারি হয়েছে হলুদ সংকেত। পাহাড়ে প্রবল বর্ষণের জেরেই বিপদসীমায় রয়েছে তিস্তা। সব মিলিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তিস্তা পাড়ের মানুষদের। নদীর জল ফুলে-ফেঁপে ওঠায় তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করা হচ্ছে।
শনিবার তিস্তা নদীর দোমহানির পাশাপাশি এনএইচ ৩১ জলঢাকা নদীর উপর অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সর্তকতা জারি করল জলপাইগুড়ি সেচ দফতর। জলপাইগুড়ি সেচ দফতর সেন্ট্রাল ফ্লাড কন্ট্রোল রুম সূত্রে শনিবার বেলার দিকে এ কথা জানা যায়। তিস্তা নদীর দোমহনি এবং জলঢাকা সংরক্ষিত এলাকায় জারি হলুদ সর্তকতা। শনিবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট নাগাদ জলপাইগুড়ি গজলডোবার তিস্তা ব্যারেজ থেকে ৪৮৭০.০৪ কিউমেক জল ছাড়া হয়েছে।
ময়নাগুড়ি ব্লকের ধর্মপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাকালী সদ্দার পাড়া গ্রামের একটানা বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর জলে জলমগ্ন বাড়িঘর, বহু পরিবার জলমগ্নর ফলে চরম সমস্যায় বলে জানিয়েছে ওই এলাকায় বাসিন্দারা। বর্তমানে এই পরিবার গুলোর মূল সমস্যা পানিও জলের বলে অভিযোগ।