‘একটা টাকাও কেউ দেয়নি, খোঁজও নেয়নি’, উত্তরবঙ্গ সফরের আগে কেন্দ্রকে তোপ মমতার
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে ভাসছে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। সমতলের মালদা থেকে পাহাড়ের কালিম্পং, দার্জিলিংয়ে বানভাসী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ধসের ফলে স্বাভাবিক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এই আবহে আজ, রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রওনা দিলেন উত্তরবঙ্গে। আর উত্তরবঙ্গ সফরের আগে কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করলেন। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, বাংলার বন্যা নিয়ে কেউ খোঁজ নেয়নি। নেপালের নদী থেকে জল ছাড়ায় পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উত্তরবঙ্গের এই পরিস্থিতির জন্য দুষলেন কেন্দ্রকে। বন্যার ক্ষতিপূরণ নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে বঞ্চনা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের সঙ্গে মিরিক, সিকিমের যোগাযোগ স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। আর উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ফরাক্কা ব্যারাজে ড্রেজিং করে না কেন্দ্রীয় সরকার। তাই পলি জমে গিয়েছে। এই কারণে ওই ব্যারাজে জলধারণের ক্ষমতা কমেছে। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে কোনওরকম সাহায্য মেলেনি। একটা টাকাও কেউ দেয়নি। কেউ খোঁজও নেয়নি। কোশী নদীর জলে বানভাসী উত্তরবঙ্গের একাধিক এলাকা। সেই জল বিহার দিয়ে বাংলায় প্রবেশ করতে শুরু করেছে। আর সংকোশ নদীর জলস্তর বৃদ্ধির জেরে মালদায় বন্যা।’
অন্যদিকে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েকদিনে বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। নতুন করে কিছু জায়গা বানভাসী হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘নেপাল থেকে কোশী নদীর জল ছেড়ে দিয়েছে ৫ লক্ষ কিউসেক টন। ওই জল বিহার হয়ে বাংলায় ঢুকছে। সংকোশ নদীর জলে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি আক্রান্ত। আর নেপালের ছাড়া জল বিহার হয়ে ঢুকতে শুরু করেছে। তার জেরে মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ দিনাজপুরের ইটাহার–সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে।’ স্থানীয় প্রশাসনকে কয়েকটি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। মাইকিং করে সরে যেতে সতর্ক করা হয়েছে।
এছাড়া প্রবল বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত নেপাল। নাগাড়ে বর্ষণের জেরে বন্যায় ভেসে গিয়েছে গোটা দেশ। বন্যার মধ্যেই ব্যাপক ভূমিধসের কবলে পড়েছে প্রতিবেশী দেশের নানা এলাকা। এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে কাঠমান্ডু-সহ একাধিক এলাকা। ইতিমধ্যেই নেপালে ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর মিলেছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘শুধু নির্বাচনের সময় আসবে, আর বড় বড় কথা বলে চলে যাবে। কোনও কাজ করে না। নেপাল থেকে জল বিহার হয়ে বাংলায় ঢুকছে। তার ফলে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্লাবিত। বন্যা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। ফরাক্কা ব্যারেজ কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। আগে ওরা ১২০ কিলোমিটার দেখভাল করত। এখন কমে ২০ কিলোমিটারে এসে গিয়েছে। পুরো উত্তরবঙ্গ ভাসছে। কেউ খবরও নেয়নি, এক পয়সা দেয়ওনি। বাংলা একমাত্র রাজ্য, যারা বন্যার ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত।’