• বন্যা দুর্গতদের ভুলে উৎসব নয়, উত্তরকন্যার বৈঠকে প্রশাসনিক আধিকারিকদের বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
    প্রতিদিন | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: টানা বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের একাধিক এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি। তাতে বিপর্যস্ত জনজীবন। শুধু যে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজনই মৃত্যুমুখে পড়েছেন, তা নয়। কোথাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে, কোথাও আবার নৌকাডুবিতে প্রাণ হারিয়েছেন কয়েকজন। তাঁদের সকলের পরিবারের জন্য আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রবিবার শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে একটি পরিবারকে সেই অর্থ তুলে দিলেন তিনি নিজেই। মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে কেঁদে ফেললেন মৃতের স্ত্রী। এদিনের বৈঠক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনের সর্বস্তরের আধিকারিককে সতর্ক করে দেন, উৎসবের আবহে কিন্তু বন্যা দুর্গতদের ভুললে চলবে না। ত্রাণের কাজে যেন অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

    উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি দেখতে পূর্বঘোষণা মতো রবিবার বিকেলে শিলিগুড়ি পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন। বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা ভারচুয়ালি সেই বৈঠকে অংশ নেন। সেখানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে তাঁদের পরামর্শ দেন। পর্যালোচনা বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এক দিকে পুজো। অন্যদিকে বন্যার ফাঁড়া। প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের পাশে থাকতে হবে। পুজো বলে বন্যাত্রাণের কাজে মানুষের পাশ থেকে সরে গেলে হবে না। এটিও একটি সেবা। বন্যাত্রাণে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।” ক্ষতিগ্রস্ত চাষের জমির জন্য আগেই শস্যবিমার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তার মেয়াদ ছিল। কিন্তু এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।

    এর পাশাপাশি জলবাহিত রোগ নিয়েও সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সময় সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। তা উল্লেখ করে তাঁর নির্দেশ, সাপের কামড়ে মৃত্যু রুখতে প্রতিটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম মজুত রাখতে হবে। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”সাপে কামড়ালে আগে ওই জায়গায় কাপড় দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দিতে হবে। তার পর রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। তাহলে প্রাণরক্ষা সম্ভব।”

    এদিকে, নেপালে বন্যা পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে বিহার ও উত্তরবঙ্গে। কোশী নদীর জলে প্লাবিত এসব এলাকা। বিভিন্ন নদীর জলস্তর বৃদ্ধির জেরে মালদহের ভূতনির চরে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হওয়া এবং জলপাইগুড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক পরিবারের ৪ জনের মৃত্যুর কথা এদিন উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এসব জরুরি পরিস্থিতি থেকে বাঁচার প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। আরও একবার বন্যার জন্য ডিভিসি-কে দায়ী করেন তিনি। সোমবার সকালে উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতা ফিরবেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্ত্রিসভার বৈঠক রয়েছে। নিজেই জানালেন সেকথা।
  • Link to this news (প্রতিদিন)