রঞ্জুগোপাল মুখোপাধ্যায়, বাঁকুড়া: প্রকৃতি কখনও কখনও নিজেই নিজের ধ্বংস লীলায় মেতে ওঠে। তবে সে আবার আপন খেয়ালেই নিজেকে নতুন করে গড়ে নেয়। এই ভাঙাগড়ার খেলা আদি অনন্তকাল ধরে বহমান। তবে সভ্যতার মধ্যগগনে মানুষের কাজকর্মে সেই প্রকৃতি যেন তার স্বাভাবিক ছন্দ হারিয়েছে। মাঝেমধ্যেই প্রকৃতির ভয়াল রূপ চাক্ষুষ করা যাচ্ছে। তারফলে বহু জনপদ বন্যা, ধস সহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কার্যত নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে দুর্গতদের। অথচ প্রকৃতিকে রক্ষা করতে পারলে এই ধরাধামেই পাওয়া যেতে পারে স্বর্গসুখ। আর এই বিষয়টিকেই এবার থিমের মাধ্যমে তুলে ধরতে চলেছে বাঁকুড়া শহরের সিনেমারোড সর্বজনীন। তাদের থিমের পোশাকি নাম ‘স্বপ্নের উড়ান’।
সিনেমারোড সর্বজনীনের ৩০তম বর্ষে পুজোর বাজেট ১৬লক্ষ টাকা। দ্বিতীয়ার দিন ওই পুজোর উদ্বোধন হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে পুজোর উদ্বোধন করতে পারেন বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুজো মণ্ডপে বাঁকুড়া জেলা পুলিস ও প্রশাসনের আধিকারিক ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
সিনেমা রোড সর্বজনীনের সভাপতি রুদ্র চৌধুরী, সম্পাদক শিবশঙ্কর দত্ত বলেন, আমরা অনবরত বিভিন্ন কার্যকলাপের মাধ্যমে প্রকৃতিকে ধ্বংস করে চলেছি। প্রকৃতি তার শোধ তুলছে। অথচ প্রকৃতিকে ভালো রাখলে স্বর্গের মতো সুখ পাওয়া যেতে পারে। সেই বিষয়টি নিয়ে সকলকে সচেতন করতেই আমরা প্রকৃতি সংক্রান্ত থিম করছি। মণ্ডপেও একখণ্ড স্বর্গকে তুলে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাঁশ, বাটাম, কাপড় দিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। মণ্ডপের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। প্রতিমার থিম ‘স্বর্গের দেবী’। এক চালার মাটির প্রতিমায় দেবী পূজিত হবেন। একটি চাঁদের মধ্যে মায়ের চার ছেলেমেয়ে ও তাঁদের বাহনরা থাকবে। মণ্ডপের মধ্যে ঢুকলে দর্শনার্থীদের ইন্দ্রলোকে প্রবেশের অনুভূতি হবে। সেখানে পক্ষীরাজ ঘোড়ার মডেল সহ আনুষঙ্গিক সবকিছুই থাকবে।
পুজো কমিটির সহ সম্পাদিকা রুমকি কুণ্ডু, রুমা চক্রবর্তী বলেন, আমাদের সর্বজনীনে এলাকার মহিলাদের উপস্থিতি থাকে চোখে পড়ার মতো। পুজোর জোগাড় থেকে শুরু করে বেশিরভাগ কাজ মহিলারাই করেন। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ পুজোয় অংশগ্রহণ করে। এখানে কোনও ভেদাভেদ নেই। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনপ্রিয় একটি টিভি রিয়েলিটি শোয়ে অংশ নেওয়া বাঁকুড়ার এক কিশোরীকে আমরা সংবর্ধনা দেব।