• বন্যায় নষ্ট কয়েকশো বিঘে জমির ফুল, মাথায় হাত ডেবরার চাষিদের
    বর্তমান | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ডেবরা: বিঘার পর বিঘা ফুলের চাষ করেছিলেন চাষিরা। আশা ছিল পুজোর আগে ফুল বিক্রি করে টাকার মুখ দেখতে পাবেন। আর সেই টাকাতেই হবে পুজোর জামাকাপড়। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে টানা বৃষ্টি আর তার জেরে বন্যা। জমিতে জল দাঁড়িয়ে যাওয়ায় রজনীগন্ধা, গাঁদাফুল চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা ব্লকের ডুঁয়া সহ একাধিক গ্রামের কয়েকশো বিঘা জমির ফুল নষ্ট হয়েছে। ফুলচাষে লক্ষাধিক টাকা লগ্নি করে ক্ষতির সম্মুখীন চাষিরা। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, এই এলাকায় উৎপাদিত ফুল আমেরিকা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যায়। ফুলের মান ভালো হওয়ায় ভিন রাজ্যেও ডেবরার ফুলের চাহিদা ভালো। প্রতি বিঘা জমিতে ফুলের চাষ করতে খরচ ৫০ হাজার টাকার বেশি। এই অবস্থায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে চাষিদের। পুজোর সময়ে ফুলের দাম ভালো পাওয়া যায়। সরকারি ক্ষতিপূরণের আশায় রয়েছেন ফুল চাষিরা। 


    এদিন কথা হচ্ছিল ফুলচাষি অশোক বরামের সঙ্গে। বহুবছর ধরে তিনি ফুল চাষের সঙ্গে যুক্ত। তিনি বলেন, পুজোর সময় ফুলের চাহিদা বেশ বেড়ে যায়। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে এই সময় ভালো দামও পাওয়া যায়। কিন্তু বন্যা পরিস্থিতির জেরে ফুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিপূরণ পেলে খুবই উপকার হবে।  স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একসময় জেলার চাষিরা বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেতেন না। কিন্তু বর্তমানে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ায় তাঁরা ধান চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন অর্থকরী ফসল যেমন, ফুলের চাষ করছেন। এতে মুনাফা বেশি। জানা গিয়েছে, ডেবরা ব্লকের ডুঁয়া, বালিচক, গোটগেড়িয়া সহ একাধিক এলাকায় ফুলের চাষ হয়। শতাধিক বিঘা জমিতে ফুলের চাষ করেন চাষিরা। উৎপাদিত ফুল বিক্রির জন্য কোলাঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। সারা বছর গড়ে একশো টাকা কেজি দরে রজনীগন্ধা ফুল বিক্রি হয়। সেই ফুল চলে যায় দেশ, বিদেশের নানা প্রান্তে। কিন্তু এবছর বন্যায় ছবিটা বদলে গিয়েছে। চোখের কোণায় জল চাষিদের। 


    এক ফুল চাষি বলেন, যে ফুলগুলো নেতিয়ে পড়েছে, সেই ফুল বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। দুর্গাপুজোর সময়ে প্রতি কেজি ফুল বিক্রি করে তিন থেকে চারশো টাকা পাওয়া যায়। কিন্তু এবছরও ফুল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বেশ সমস্যা হচ্ছে। তবে গণেশ পুজোর সময়ে ফুলের দাম ভালো পাওয়া গিয়েছে। জমিতে যে ফুলের গাছ বেঁচে গিয়েছে, সেগুলো বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা চলছে। 


    ফুল চাষি তাপস দে, অসিত দাস, রতন রুইদাস বলেন, হঠাৎই চাষের জমিতে জল ঢুকতে শুরু করে। বৃষ্টি কমে গেলেও জল সরছে না। এবছর খুব করুণ অবস্থা। দিনমজুররাও সমস্যায় পড়েছেন। ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলা পরিষদের দলনেতা মহম্মদ রফিক বলেন, জেলার অন্যান্য জায়গাতেও ফুলচাষিদের ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসন সব দিক থেকে সহযোগিতা করবে। চাষিদের পাশে জেলা প্রশাসন সর্বদা আছে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)