• ভাড়া বাড়িতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মুটুকুড়া গ্রামে সরকারি ভবনে ‘সংসার’ পেতেছেন প্রৌঢ় 
    বর্তমান | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, পুরুলিয়া: বাম আমলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য জমি দান করেছিলেন। সরকারি ভবন তৈরিও হয়েছিল। কিন্তু, সম্পূর্ণ হয়নি। ওই ভবনে স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালুও হয়নি। নিজের দান করা জমিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু না হওয়ায় পরিবার নিয়ে নিজেই সরকারি ওই ভবনে থাকা শুরু করেছেন প্রৌঢ়। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি ওই ভবন বেদখল হয়ে থাকলেও প্রশাসনের কেউ ফিরেও তাকাননি। অথচ ঝালদায় ভাড়া বাড়িতেই চলছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র।


    পুরুলিয়ার ঝালদা-২ ব্লকের হীরাপুর আদারডি গ্রাম পঞ্চায়েতের মুটুকুড়া গ্রামের ফাল্গুনী কুমার এলাকায় এক সময় কংগ্রেসের নেতা ছিলেন। পরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন ফাল্গুনীবাবু। মুটুকুড়া গ্রামে স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরির জন্য ২০০৮-’০৯ সালে ২ ডেসিমল জায়গা দান করেন। সেই সময় গ্রাম পঞ্চায়েত ছিল বামফ্রন্টের দখলে। তৎকালীন প্রধান কথা দিয়েছিলেন দান করা ওই জমিতে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি হবে। চিকিৎসক আসবেন। গ্রামের সকলে চিকিৎসা পাবেন। সেই সঙ্গে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র দেখাশোনার দায়িত্ব পাবেন ফাল্গুনীবাবুই। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে সেই সময় সরকারি ভবনটি তৈরি হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। যদিও তা সম্পূর্ণ হয়নি। জানালা দরজা পর্যন্ত বসানো হয়নি। দীর্ঘদিন ওই অবস্থায় পড়ে থাকার পর ফাল্গুনীবাবু সরকারি ওই ভবনের দখল নেন বলে অভিযোগ। ভবনটি সংস্কার করিয়ে, দরজা জানালা বসিয়ে নিজেই সেখানে গোটা পরিবার নিয়ে থাকা শুরু করেন।


    ফাল্গুনীবাবু বলেন, আমি ওই জমি দান করেছিলাম। তৎকালীন প্রধান বলেছিলেন স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হবে এবং ডাক্তার আসবে। তাতে সাধারণ মানুষের যেমন সুবিধা হবে। আমাকে নাইট গার্ডের কাজও দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। সরকার বিল্ডিংটি করেছিল। কিন্তু, সম্পূর্ণ করেনি। কেউ আসেওনি। প্রায় ১০ বছরেরও বেশি সময় ফাঁকা পড়েছিল। নষ্ট হচ্ছিল। তাই নিজের টাকা খরচ করে সংস্কার করেছি। দরজা-জানলা লাগিয়ে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেছি। সরকার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র চালু করতে চাইলে অবশ্যই ছেড়ে দেব। কেউ এখানে আসেনি, কাকে ছেড়ে দেব বাড়িটা? 


    হীরাপুর আদারডি গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মী আশিস কুমার বলেন, পঞ্চায়েতের টাকা থেকে ২০০৮-’০৯ সালে বিল্ডিংটি তৈরি হয়েছিল। তারপর কী অবস্থায় আছে জানি না। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সোমবারি কুমার বলেন, মুটুকুড়া গ্রামে কখনও যাইনি। জানি না বিষয়টি। মুটুকুড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মী গিরিবালা মাহাত বলেন, ভাড়া বাড়িতেই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চলছে। ওই বিল্ডিং তো এখনও হস্তান্তরই হয়নি।


    বিএমওএইচ প্রত্যয়প্রতিম দত্ত বলেন, ২০০৮-‘০৯ সালে তৈরির পর কেন, তা সম্পূর্ণ বা হস্তান্তর হয়নি তা খতিয়ে দেখতে হবে। তাছাড়া বর্তমানে ৫ ডেসিমলের কম জায়গায় সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরিও সম্ভব নয়। ঝালদা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীপক কুমার সিং বলেন, দীর্ঘদিন আগের ঘটনা। এ বিষয়ে স্পষ্ট জানা নেই। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। (মুটুকুড়া গ্রামে বেদখল হয়ে রয়েছে স্বাস্থ্য কেন্দ্র। পরিবার নিয়ে থাকছেন জমিদাতা। নিজস্ব চিত্র।)
  • Link to this news (বর্তমান)