নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: অবৈধ বৈদ্যুতিক ফেন্সিংয়ের বিরুদ্ধে জোর প্রচারে নামল বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি। রবিবার তারা গজলডোবার টাকিমারি এবং রংধামালি এলাকায় মাইকিং করে। সঙ্গে লিফলেট বিলি করে। গত শুক্রবার রাতে এমনই বৈদ্যুতিক ফেন্সিংয়ের সংস্পর্শে এসে টাকিমারি এলাকায় শিশু সহ একই পরিবারের চার জনের মৃত্যু হয়। টাকিমারির পাশাপাশি মিলনপল্লি ও দুধিয়াবস্তি মিলিয়ে অন্তত ৫৭টি বাড়িতে এধরনের অবৈধ বৈদ্যুতিক ফেন্সিং রয়েছে। হাতির হামলা থেকে জমির ফসল ও বাড়িঘর বাঁচাতে জিআই তার দিয়ে পরিবারগুলি ফেন্সিং করে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে রাখছে। এই ধরনের ফেন্সিং থেকে যে কোনও মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। গজলডোবার মতো মালবাজার এবং ধূপগুড়ির সোনাখালি জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে এধরনের প্রচুর ফেন্সিং রয়েছে বলে অভিযোগ।
বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির জলপাইগুড়ির রিজিওনাল ম্যানেজার সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, হুকিং করে যাতে কেউ বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেন এবং জমির ফসল কিংবা খামারের পোলট্রি বাঁচাতে কেউ যাতে বেড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে না রাখেন, সে ব্যাপারে মাইকিং চলছে। লিফলেটও বিলি করছি। এরপর পুলিস ও বনদপ্তরকে নিয়ে অভিযান হবে।
বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি সূত্রে খবর, ছ’মাসে জলপাইগুড়ি ও মালবাজার ডিভিশন মিলিয়ে হুকিং ও বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগের বিরুদ্ধে ১৪২টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। জরিমানা আদায় হয়েছে ৪৬ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা। তা সত্ত্বেও কিছু পরিবার হুকিং বন্ধ করেনি। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পার এক আধিকারিকের দাবি, প্রতিমাসেই তাঁরা গড়ে ২০টি অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরও হুকিং পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না।
টাকিমারির ঘটনায় সংস্থার আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ ছিল। কিন্তু কিছুদিন ধরে মিটার অকেজো ছিল। পরিবারটি রাস্তার বিদ্যুতের খুঁটি থেকে জিআই তার দিয়ে হুক করে। প্রায় ২০০ মিটার নিয়ে আসা হয় ওই তার। এরপর ওই তার দিয়ে গোটা বাড়ি ঘিরে দেওয়া হয়। কোনওভাবে যাতে হাতি ঢুকতে না পারে, সেজন্য বাড়ির সীমানায় থাকা গাছের গায়ে পেঁচিয়ে দেওয়া হয় ফেন্সিংয়ের তার। দমকা হাওয়া ও বৃষ্টিতে ওই তার ছিঁড়েই দুর্ঘটনার শিকার হয় পরেশ দাসের পরিবার। এর আগে এধরনের ফেন্সিংয়ের কারণে ওদলাবাড়ি, নাগরাকাটা এলাকায় একাধিক হাতির মৃত্যু হয়েছে। - নিজস্ব চিত্র।