• টালার ওসির সঙ্গে পুলিসকর্তার দীর্ঘ ফোন কল এজেন্সির নজরে
    বর্তমান | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের মামলার শুনানি দেশের শীর্ষ আদালতে আজ সোমবার হবে।  সকলেরই কৌতূহল রয়েছে, তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে ঠিক কী রিপোর্ট জমা দেয়, তা নিয়ে।  গতে বাঁধা ডিজিটাল নথির বাইরে বেরিয়ে এসে খুন ও ধর্ষণে সিভিক সঞ্জয় বাদে আর কারা জড়িত রয়েছে এবং মোটিভ কী, তাই নিয়ে কোনও নতুন তথ্য দেবে তদন্তকারী সংস্থা? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে আইনজীবী থেকে আমজনতার মধ্যে। এরইমাঝে টালা থানার ওসির সঙ্গে  কলকাতা পুলিসের এক কর্তার সবমিলিয়ে ৪৫ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের ফোন কল কেন, তা জানতে তৎপর হয়ে উঠেছে এজেন্সি। অভিযুক্ত সিভিকের দাঁতের নমুনার রিপোর্ট এসে গিয়েছে। যাতে ইঙ্গিতপূর্ণ লাইন রয়েছে বলে খবর।


    আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের মামলা সুপ্রিম কোর্টে শেষবার শুনানি ছিল ১৭ সেপ্টেম্বর। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি মনোজ মিশ্র ও বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালার বেঞ্চ জানায় ২৭ সেপ্টম্বর শুনানি হবে। রাজ্যের এক আইনজীবীর সমস্যা থাকায়, তাঁর তরফে আবেদন করা হয় দিন পিছনোর। সুপ্রিম কোর্ট তা মেনে নিয়ে শুনানির জন্য ৩০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করে। আজ সোমবার দুপুর দুটোয় তালিকার ৪২ নম্বরে থাকা মামলাটি উঠবে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। শুনানিতে অংশ নেবেন ৪২টি পক্ষের নথিভুক্ত ২০০’র বেশি আইনজীবী। 


    টালা থানার মধ্যেই ভুয়ো নথি তৈরি ও অদলবদল করা হয়েছে— আদালতে জমা দেওয়া রিমান্ড লেটারে সিবিআইয়ের এই দাবি ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। টালা থানার তদানীন্তন ওসি যে এই ঘটনায় জড়িত রয়েছেন, এমনটাই দাবি করছেন তাঁরা। কিন্তু তিনি একা নন, তাঁর সঙ্গে আরও অনেকেই জড়িত রয়েছেন বলে আশঙ্কা করছেন সিবিআই আধিকারিকরা। সংশ্লিষ্টদের চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে। এক্ষেত্রেও তদন্তকারীদের সবেধন নীলমণি অভিজিৎবাবুর মোবাইল ফোন।  সিবিআই দাবি করছে, তদানীন্তন ওসির মোবাইলের কল লিস্ট ঘেঁটে তারা জেনেছে, লালবাজারের এক কর্তা ও অভিজিৎবাবুর মধ্যে গত ৯ আগস্ট মোট পাঁচবার কথা হয়েছে।  সবমিলিয়ে যার ডিউরেশন ছিল ৪৫ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, ওই কর্তা এমন কী নির্দেশ দিচ্ছিলেন, যে বারবার ফোন করার প্রয়োজন পড়ল! সাধারণত ওই পদমর্যাদার আধিকারিক সরাসরি কোনও ওসিকে ফোন করেন না। অভিজিৎবাবু সিবিআইকে জানিয়ে গিয়েছেন, কেসের বিষয়ে কথা হচ্ছিল। যদিও তদন্তকারীদের দাবি, নির্দেশমতোই মৃত্যু ঘোষণার আগে ফরেন্সিক টিম ডেকে নেওয়া, বাজেয়াপ্ত নমুনা নিয়ম না মেনে সংরক্ষণ করা, এফআইআর দেরিতে করা সহ তথ্যপ্রমাণ লোপাটের কাজ কীভাবে হবে, এসব কথাবার্তাই হয়েছে। যদিও এর স্বপক্ষে এখনও কোনও প্রমাণ তাঁরা জোটাতে পারেননি। 


    তরুণীর চিকিৎসকের শরীরে দাঁতের আঘাতের চিহ্ন ছিল। সেই কামড় সঞ্জয়ের কি না, জানতে তার দাঁতের নমুনা নিয়ে ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়। সিবিআই সূত্রে খবর, ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অভয়ার শরীরে যে দাঁতের কামড় মিলেছে তার সঙ্গে সংগৃহীত নমুনা মিলছে না। তাহলে কে কামড় দিল তরুণীকে, সে প্রশ্ন উঠছে। সঞ্জয় বাদে অন্যদের উপস্থিতির তত্ত্ব আরও জোরাল হচ্ছে। সেই কারণে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়া সমস্ত চিকিৎসকদের দাঁতের নমুনা নেওয়া হবে বলে খবর।  যদিও এই রিপোর্ট নিয়ে সিবিআই এইমসের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে আবার পরামর্শ করছেন বলে খবর মিলেছে।    
  • Link to this news (বর্তমান)