শনিবার সকালে চাষের জমিতে কাজ করছিলেন কয়েক জন। আচমকাই বিকট শব্দ। দেখা যায়, অদূরে পড়ে রয়েছে বরফের চাঁই। মাটিতে পড়ে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে চাঁইটা। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বাঁকুড়ার সিমলাপালে। আকাশ থেকে কী ভাবে বরফ পড়ল, তা ভাবাচ্ছে বিজ্ঞানীদেরও।
নিম্নচাপের কারণে গত কয়েক দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে বাঁকুড়ায়। মেঘলা আকাশের কারণে সূর্যের দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না। বৃষ্টি থামার পর শনিবারই সূর্যের দেখা মিলেছে। রোদ ওঠায় সকাল সকাল সিমলাপাল ব্লকের ছোট রামবনি গ্রামে চাষের কাজে বেরিয়েছিলেন অনেকে। গ্রামে ঢোকার মুখেই একটি জমিতে ফসলের পরিচর্যার কাজ করছিলেন কয়েক জন। হঠাৎই সোঁ সোঁ শব্দ কানে আসে তাঁদের। সেই শব্দ লক্ষ্য করে তাকিয়ে দেখেন তাঁরা, একটি বরফের চাঁই আকাশ থেকে মাটিতে আছড়ে পড়েছে। মাটিতে পড়তেই টুকরো টুকরো হয়ে যায় সেটি। সঙ্গে সঙ্গে পালিয়ে যান স্থানীয়েরা।
প্রাথমিক আতঙ্ক কাটিয়ে আবারও ঘটনাস্থলে ফিরে আসেন অনেকে। দেখেন, বরফের চাঁইটি যেখানে পড়েছিল সেই জায়গায় শক্ত লাল কাঁকুরে মাটি বসে গিয়ে একটি গর্ত হয়েছে। সেই গর্তে এবং তার চারপাশে অসংখ্য বরফের টুকরো ছড়িয়ে আছে। খবর জানাজানি হতেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন অনেকে। বেশ কিছু ক্ষণ পর চড়া রোদে বরফের টুকরোগুলি গলে জলে পরিণত হয়। স্থানীয় বাসিন্দা আকাশ দুলে বলেন, ‘‘আমরা ধানের জমিতে কাজ করছিলাম। আচমকাই প্রবল শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখি অদূরে একটা ভারী বরফের চাঁই আকাশ থেকে এসে পড়ল। বরফটির যে আকারের ছিল তাতে আমাদের ধারণা, তার ওজন কমপক্ষে এক কুইন্ট্যালের কাছকাছি হবে। কী ভাবে এমনটা হল তা জানি না।’’
এ ভাবে আকাশ থেকে বরফের টুকরো পড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। চিন্তায় পড়েছেন বিজ্ঞানীরাও। এ প্রসঙ্গে বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের ভূগোলের শিক্ষক সুব্রত পান বলেন, ‘‘প্রাকৃতিক ভাবে এত বড় আকারের বরফ বায়ুমণ্ডলে তৈরি হওয়া কার্যত অসম্ভব। এত বিশালাকার বরফ তৈরি হওয়ার অনেক আগেই তা মাধ্যাকর্ষণের টানে ভূপৃষ্ঠে এসে আছড়ে পড়বে। আমার ধারণা, কোনও বিমান বা হেলিকপ্টার ওই বরফের চাঁইটি নিয়ে যাচ্ছিল। দুর্ঘটনাবশত সেটি পড়ে যাওয়াতেই এই বিপত্তি হয়ে থাকতে পারে।’’