প্রায় পাঁচ মাস পর জেল থেকে বেরিয়েও ভাঙড়ের ‘তাজা নেতা’ আরাবুল ইসলাম দলের অন্দরেই কোণঠাসা। এ বার তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লাকে পাশে নিয়ে প্রকাশ্য সভা থেকে আরাবুলকে নিশানা করলেন যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ সায়নী ঘোষ। তিনি জানান, ভাঙড়ে তৃণমূলকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য শওকতের ভূমিকা প্রশ্নাতীত। শওকতের গ্রহণযোগ্যতা মেনে নিতে যদি কারও কষ্ট হয়, সেটা একান্তই তাঁর সমস্যা। পাশাপাশি নাম না করে আরাবুল তথা তৃণমূলের একাংশকে ‘ঘরশত্রু বিভীষণ’, ‘গদ্দার’ বলেও আক্রমণ করলেন সায়নী।
রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজারে কর্মিসভা করে তৃণমূল। পাঁচ বিধায়ক এবং এক সাংসদ উপস্থিত ছিলেন সেখানে। সভা থেকে ‘গদ্দার হঠাও, ভাঙড় বাঁচাও’ স্লোগান তুলে নাম না করেও আরাবুলকে নিশানা করেন সাংসদ সায়নী। তিনি নেতা এবং কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘ভাঙড়ে আইএসএফ, বিজেপির সঙ্গে লড়াই পরে। আগে নিজেদের ঠিক করতে হবে।’’ তিনি অভিযোগ করেন, তৃণমূলের অন্দরে থেকে বেশ কয়েক জন নেতা ‘পিছন থেকে ছুরি মারছেন’। তাঁদের চিহ্নিত করতে হবে। পরে আরাবুলকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সায়নী বলেন, ‘‘ভাঙড়ে তৃণমূলকে একটি পরিবারের মতো করে তুলেছেন শওকত মোল্লা। তিনি পড়ে থেকেছেন ভাঙড়ে। এখন ভাঙড়ের মানুষের কাছে শওকত মোল্লার গ্রহণযোগ্যতা মেনে নিতে যদি কারও কষ্ট হয়, তবে সমস্যা তাঁরই।’’
ক’দিন ধরেই শওকত এবং আরাবুল গোষ্ঠীর মধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে কোন্দল। শওকতকে ‘হার্মাদ’ বলে কটাক্ষ করেছেন আরাবুল। তার পরেই ক্যানিং পূর্বের বিধায়কের ডাকে রবিবারের ওই সভা। সেখান থেকে তৃণমূল সাংসদ এবং বিধায়কেরা আদতে আরাবুল গোষ্ঠীকে ‘সাবধান’ করে দেন।
এই প্রেক্ষিতে আবারও শওকতকে আক্রমণ করেছেন ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধাক আরাবুল। তিনি বলেন, ‘‘ক্যানিং শেষ করে দিয়ে এখন ভাঙড়ে আসছে মধু খাওয়ার জন্য।’’ তাজা নেতার দাবি, ভাঙড়ে তাঁকে কোণঠাসা করার মতো কোনও মানুষ নেই। এমনকি, শওকত-ও তাঁর হাত ধরেই ভাঙড়ে এসেছেন। যদিও সায়নীকে নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ আরাবুল। তিনি বলেন, ‘‘সাংসদ ভাঙড়ের পরিস্থিতি জানলে তবেই তো বুঝতে পারবেন। ২০০৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে খুনের চেষ্টা করেছিল, সেই হার্মাদ এখন ভাঙড়ে ছড়ি ঘোরাতে চাইছে!’’