নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: দীর্ঘ বছর আগে মৃৎশিল্পী স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু আজও স্বামীর স্মৃতি আকঁড়ে দশভূজার মূর্তি গড়ে চলেছেন রায়গঞ্জ শহরের দেশবন্ধুপাড়ার প্রৌঢ়া অর্পিতা পাল। এবছরও নিজ হাতে রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জের সাতটি ক্লাবের দুর্গা প্রতিমা গড়ছেন তিনি। গত কয়েক মাস ধরে নাওয়া-খাওয়া ভুলে প্রতিদিন দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশের মূর্তি গড়ার কাজ করে চলেছেন তিনি। কিডনির অসুখে স্বামী মৃৎশিল্পী গণেশ পালকে হারিয়ে এখন গোটা সংসারের ভার অর্পিতাদেবীর উপর। কিন্তু তাতে ভেঙে পড়েননি তিনি। উল্টে ছেলেকে বড় করার লক্ষ্য নিয়ে স্বামীর পেশাকেই রোজগারের পথ হিসেবে বেছে নেন এবং স্বনির্ভর হন। আজও সেই জীবন যুদ্ধ চলছে। প্রতিমাশিল্পী অর্পিতা বলেন, আমার বাপের বাড়িতে মাটির প্রদীপ ইত্যাদি তৈরি হলেও প্রতিমা তৈরি হতো না। বিয়ের পর আমার স্বামী হাতে ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ শিখিয়েছিলেন। উনি যতদিন ছিলেন সহযোগী হিসেবে কাজ করেছি। কীভাবে ঠাকুর বানাতেন দেখেছি। স্বামীর অবর্তমানে এখন নিজেই সেই কাজ করছি। অর্পিতাদেবীর সংযোজন, আমার একমাত্র ছেলে পড়াশোনা করে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হলেও আমি একাজ করেই খুশি। মূর্তি গড়াতেই যেন শান্তি মেলে। তাই শুধু দশভূজা নয়, বারো মাসে তেরো পার্বনে মনসা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কালী, মহাদেব- সব দেবদেবীর মূর্তি গড়েন তিনি। কয়েকজন সহযোগীও রয়েছে তাঁর। প্রতিদিন সকালে রান্না সেরে অর্পিতাদেবী লেগে পড়েন মূর্তি গড়তে। কাজের ফাঁকে চলে খাওয়া-দাওয়া, ঘর সংসারের কাজ। কাজ করতে করতে হালকা হেসে শিল্পীর প্রতিক্রিয়া, এভাবেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। (মূর্তি রং করার কাজে ব্যস্ত দেশবন্ধুপাড়ার বাসিন্দা অর্পিতা পাল।-নিজস্ব চিত্র)