এখনও খানাকুল ২ ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ধান্যগোড়ি ও মাড়োখানা পঞ্চায়েত এলাকা থেকে বন্যার জল পুরোপুরি নামেনি। বাকি পঞ্চায়েতগুলির মধ্যে জগৎপুর, রাজহাটি ১, পলাশপাই ১ ও চিংড়া পঞ্চায়েত এলাকার দু’তিনটি মৌজাতেও জল রয়েছে। রবিবার দুর্গতদের ত্রাণ দিতে এসে বন্যা পরিস্থিতির জন্য রাজ্যকেই দুষলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
সুকান্ত বলেন, “গত এক বছরে রাজ্যের কোথাও বাঁধ মেরামতি হয়নি। এক বছর আগের বন্যাকে মুখ্যমন্ত্রী ‘ম্যান মেড’ বলেছেন, এ বারও বলছেন। কিন্তু সেই ‘ম্যান মেড’ বন্যা আটকাতে কী কাজ করেছেন, তার ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না।” রাজ্যের নিজস্ব জলাধারগুলি থেকেও গত ১০ বছরে কোথাও পলি তোলা হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। অভিযোগ মানেনি তৃণমূল। তারা সুকান্তের ওই অভিযোগের পিছনে রাজনীতি দেখছে।
তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা যুব সভাপতি পলাশ রায়ের দাবি, ‘‘রাজ্য নদী সংস্কার করেছে, পলি তুলেছে, বাঁধেরও সংস্কার করেছে। এই ‘ম্যান মেড’ বন্যায় বিধ্বস্তদের পাশে থেকে যেখানে রাজ্য সরকার এবং তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা দুর্গতদের সহায়তা করছেন, তখন তিনি (সুকান্ত) মানুষের পাশে না থেকে রাজনীতি করতে এসেছেন।’’ বিজেপি বিধায়কদের দুর্গতদের পাশে দেখা যায়নি বলে পাল্টা অভিযোগ তোলেন ওই তৃণমূল নেতা।
বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ এসে প্রথমে আরামবাগের মায়াপুর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় দলীয় মঞ্চ থেকে কয়েকশো মানুষকে ত্রিপল ও শুকনো খাবার বিলি করেন সুকান্ত। সেখান থেকে খানাকুলের বন্যাবিধ্বস্ত তালিত গ্রামে যান। তালিত ও পাশেই বন্দিপুরে দ্বারকেশ্বর নদের বাঁধ ভাঙা নিয়ে তাঁর কাছে স্থানীয় মানুষ সময়ে বোরো বাঁধ না কাটা-সহ নদের গতিপথ আটকে পার্ক, হোটেল, ইটভাটা এবং লোহার পাইপ পুঁতে অবৈজ্ঞানিক ভাবে সেতু নির্মাণের অভিযোগ করেন।
সুকান্ত বলেন, “টাকা-পয়সার বিনিময়ে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের মদতেই এ সব হয়েছে। আমপানের ক্ষতিপূরণের জন্য পাঠানো হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের সঙ্গে কী রকম সম্পর্ক রাখবেন, আগে সেটা ঠিক করুন।’’ তৃণমূল এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
খানাকুলের চুয়াডাঙায় গিয়ে এ দিন গ্রামবাসী ও গবাদি পশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ওষুধ দেন উত্তর ২৪ পরগনার কয়েক জন চিকিৎসক। পাশাপাশি ত্রাণ ও পোশাক বিলি করেন তারা। স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন করেন মহিলা ও শিশুদের। এ জন্য একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বারান্দায় ক্যাম্প করেন তাঁরা।
ওই দলের চিকিৎসক সুমিত সাহা বলেন, ‘‘চুয়াডাঙায় এখনও ত্রাণ এবং চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছয়নি। এই খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ওষুধ ও শুকনো খাবার নিয়ে যাই। দুই চিকিৎসকও ছিলেন।’’ দলে থাকা পশু চিকিৎসক সন্দীপ চৌধুরী জানান, গবাদি পশুরাও ডায়েরিয়া-সহ নানা অসুখে ভুগছে। তাঁরা প্রায় দেড়শো গরু-ছাগলের চিকিৎসা করে ওষুধ দিয়েছেন।