বর্তমান সময়ে চরমতম ব্যস্ততার যুগে কাজের ফাঁকে সময় বের করে রকমারি নাড়ু তৈরি করতে প্রায় কেউই অবসর পান না। অবসর পেলেও নাড়ু তৈরি করার সেই সদিচ্ছাটাই অনেকের মধ্যে থাকেনা। তাই নারকেলের সেই রকমারি নাড়ুর স্বাদ ভুলতে বসেছে বাঙালি। ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে পুজোর সঙ্গে জড়িত আর এক আবেগ। তাই এবার বাঙালির মুখে নাড়ুর স্বাদ ফিরিয়ে দিতে, সেই সঙ্গে মনে নাড়ুর আবেগ ফিরিয়ে দিতে, নাড়ু তৈরি করে হোম ডেলিভারির ব্যবসা শুরু করেছেন কাটোয়ার গৃহবধূ রিক্তা দাস। রিক্তা জানিয়েছেন, কোভিড মহামারীর সময় বাবার কাজ চলে যাওয়ায়, সেই সময় সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়ছিল। পাশাপাশি নিজের পড়াশোনার খরচও বহন করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই সংসারের হাল ধরতে এই ব্যবসা শুরু করেছিলেন রিক্তা দাস। তখন অল্প সল্প চাহিদা থাকলেও কখন যে তাঁর তৈরি নাড়ু সাড়া ফেলে দেবে তা তিনি ভাবতেও পারেননি। এখন কাটোয়ার গৃহবধূ রিক্তা দাসের হাতে তৈরি নাড়ুর চাহিদা তুঙ্গে।
রিক্তা জানিয়েছেন, বাঙালির মুখে নাড়ুর স্বাদ ফিরিয়ে দিতে পেরে তিনি খুশি। তিনি আরও জানান, তাঁর হাতের তৈরি নাড়ু হোম ডেলিভারির মাধ্যমে পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন স্থানে তো পৌঁছে গিয়েছেই, সেই সঙ্গে ভিন জেলাতে, ভিন রাজ্যে, এমন কি ভিন দেশেও পারি দিচ্ছে প্যাকেট বন্দি হয়ে। রিক্তার এই কাজে সাহায্য করেন তাঁর মা বাবা ও তার স্বামী। রিক্তার সঙ্গে মা হাত লাগান রকমারি নাড়ু তৈরি ও প্যাকিং করার কাজে, হোম ডেলিভারীর কাজ দেখেন বাবা ও স্বামী। নাড়ু তৈরি করলেও তাঁর থেকে তাঁর মেয়ের হাতের তৈরি নাড়ুর স্বাদ অতুলনীয় এমন টাই জানান রিক্তার মা। সারা বছর অল্প সল্প চাহিদা থাকলেও জন্মাষ্টমী থেকে লক্ষী পূজো পর্যন্ত নাড়ুর চাহিদা থাকে তুঙ্গে। পুজোর আর মাত্র কয়েক দিন বাকি তাই নাড়ু তৈরি ও তার ডেলিভারি দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন কাটোয়ার গৃহবধূ রিক্তা দাস। যদিও এই নাড়ুর নাম 'কাটোয়া ভোগ' কেউ দেননি। আমরাই গর্বের সঙ্গে এটাকে 'কাটোয়া ভোগ' বলে উল্লেখ করেছি।