বন্যায় ক্ষতি ফসলের, মণ্ডপও বাঁধতে পারছে না ছোট কানারিয়ার বাসিন্দারা
এই সময় | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
বন্যার গ্রাসে পুজোর আনন্দ। দামোদরের জল নামলেও দুর্গোৎসবে মেতে ওঠার টাকাই নেই তারকেশ্বরের কেশবচক গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোট কানারিয়ার বাসিন্দাদের। চলতি বছর জৌলুস ছাড়া পুজো হচ্ছে এই বন্যা কবলিত গ্রামে। সরকারি অনুদানের জন্য অতীতে একাধিকবার তাঁরা আবেদন করেছেন। কিন্তু মেলেনি সাহায্য।২০১১ সালে শুরু হয়েছিল কানারিয়া পূর্ব পাড়ার দুর্গাপুজো। প্রথমে গ্রামের প্রবীণরাই পুজোর দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তীতে নবীন এবং প্রবীণদের যুগলবন্দিতে পুজোর আয়োজন হতো। হয়তো চাকচিক্য থাকত না, কিন্তু প্রাণোচ্ছ্বল গ্রামবাসীর ইচ্ছে এবং উদ্দীপনা ছিল ষোলআনা।
কিন্তু এই বছর পরিস্থিতি আলাদা। টানা বৃষ্টিতে সম্প্রতি দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দামোদরের জল ডুবেছিল চাষের খেত। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল কৃষিতে। নষ্ট হয় সবজি ও ধান। এখনও জল জমে বেশ কিছু চাষের জমিতে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষই কৃষির উপর নির্ভরশীল। ফলে দিশেহারা গ্রামবাসীরা। উৎসব থেকে মন উঠেছে তাঁদের। এই দুর্যোগের আগে দুর্গোৎসব কমিটি বাঁশের কাঠামো বেঁধে মণ্ডপ তৈরির কাজ শুরু করেছিল। সেই কাঠামো একই রয়েছে। নতুন করে সেখানে কোনও সাজসজ্জা করা হয়নি।
ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কী ভাবে সারা বছর সংসার চলবে, তা নিয়ে দিশেহারা এলাকাবাসী। ফলে আলাদা করে পুজো প্রসঙ্গে ভাবার মন মানসিকতা তাঁদের নেই। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে পুজো হবে, তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে কমিটি।
পুজো কমিটির সদস্য স্বরূপ গুছাইত বলেন, 'এ বার পুজো হবে। তবে জৌলুস কমবে। নিয়ম রক্ষার পুজো করা হবে এই বছর। দামোদরের জল নেমে গেলেও মানুষের চোখের জল এখনও থামেনি। গ্রামের খুদেরা পুজোয় খুব মজা করে। ওদের কথা ভেবেই আমরা পুজো বন্ধ করছি না।'
গ্রামের বাসিন্দা চায়না হাজরা বলেন, ‘বন্যার জন্য প্রভাবিত প্রতিটি পরিবার। নতুন জামা কেনার সামর্থ্যও অনেকের নেই। অন্যান্য বছর আমরা চাঁদা তুলে পুজো করি। এ বার খুব বেশি চাঁদা দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই।’