• রাতভর মাইকে প্রচার, সরানো হলো ১৪ হাজার পরিবারকে
    এই সময় | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, মালদা: একেই বোধহয় বলে মরার উপর খাঁড়ার ঘা। গত দেড় মাস ধরে গঙ্গা ও ফুলহারের জলে মানিকচকের ভুতনি, গোপালপুর, রতুয়ার মহানন্দাটোলা, বিলাইমারি জলমগ্ন। দুই নদীই বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এ বার তার দোসর হতে যাচ্ছে নেপাল থেকে ধেয়ে আসা জল।শনিবার নেপালের কোশি, গণ্ডক-সহ বেশ কিছু নদীর ব্যারাজ থেকে প্রচুর জল ছাড়া হয়েছে যা বিহারের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ভাসিয়ে রবিবার মাঝ রাতেই মালদায় পৌঁছে যাওয়ার কথা। সেই খবর পেয়েই জেলা প্রশাসন শনিবার মাঝরাত থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। ইতিমধ্যেই ১৪ হাজার পরিবারকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

    জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, বিডিও- সহ প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা এ দিন দুর্যোগপূর্ণ ব্লকে রাত জাগবেন। মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের সবকটি জেলার জেলা প্রশাসন, পুলিশ, সেচ কর্তা ও মন্ত্রীদের সতর্ক করেছেন। শনিবার রাতে খবর আসে নেপালে অত্যধিক বৃষ্টির জন্য ব্যারাজ গুলোতে প্রবল জলের চাপ তৈরি হওয়ায় তারা জল ছাড়তে শুরু করেছে। ফলে গঙ্গার জলস্তর এক মিটার বেড়ে যেতে পারে।

    রাজ্য সেচ দপ্তর মারফৎ রাতে এই সতর্ক বার্তা জেলায় পৌঁছতেই মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র, জেলাশাসক নীতিন সিংঘানিয়া, পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব সহ সেচ, স্বাস্থ্য ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের আধিকারিকরা রাত একটা নাগাদ মানিকচকে পৌঁছে যান। বন্যা ও গঙ্গার ভাঙনে এই ব্লকের অবস্থা এ বার সবচেয়ে ভয়াবহ। ভোর রাত পর্যন্ত সেখানে প্রস্তুতি বৈঠক চলে। রবিবার রাতে এই খবর লেখা পর্যন্ত আধিকারিকরা ব্লকে ব্লকে পরিস্থিতি তদারকি করছেন।

    জেলাশাসক নীতিন সিংঘানিয়া জানিয়েছেন, ‘কোশি ও গণ্ডক মিলে নেপাল থেকে দশ লাখ কিউসেকের বেশি জল ছাড়া হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। সেই জল রবিবার মাঝরাত নাগাদ মালদায় পৌঁছনোর কথা। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন সব ব্যবস্থাপনার খোঁজ খবর নিয়েছেন। সাহস জুগিয়েছেন। জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর, রতুয়া, মানিকচক, ইংরেজবাজার এবং কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লককে বিশেষ ভাবে সতর্ক করা হয়েছে। গ্রামে গ্রামে মাইকে প্রচার করে বলা হচ্ছে, কেউ যাতে কাঁচা বাড়িতে না থাকেন, সরকারি ত্রাণ শিবির বা অন্য সুরক্ষিত জায়গায় চলে যান।’

    এ বার বন্যায় জেলায় ১৪টি সরকারি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেটা বেড়ে হয়েছে ৩৫। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৪ হাজার পরিবারকে এখনও পর্যন্ত নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে। ৭০ হাজার ত্রিপল বিতরণ করা হয়েছে। এমনিতেই মালদায় গঙ্গা ও ফুলহার নদী জলস্তর বিপদসীমার বেশ উপর দিয়ে বইছে। রাতে নেপালের জল ঢুকে পড়লে অবস্থাটা কী দাঁড়াবে সেই আতঙ্কে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন গঙ্গা, ফুলহার তীরের বাসিন্দারা।
  • Link to this news (এই সময়)