চিকিৎসককে সিভিক ভলান্টিয়ার পাঠিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল হুগলি জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে। গত ২০ অগাস্ট হুগলির ভদ্রেশ্বরের দন্তচিকিৎসক দেবু ঠাকুরকে সিভিক ভলান্টিয়ার পাঠিয়ে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমনকী হুমকির মুখেও তিনি পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে দেখা না করায় তাঁকে নোটিশ পাঠিয়ে তলব করা হয়। এর পর ওই চিকিৎসক আদালতের দ্বারস্থ হলে পুলিশের যুক্তি, এক পুলিশ আধিকারিকের দাঁতে ব্যথা হচ্ছিল। তাই ওই চিকিৎসককে ডেকে পাঠানো হয়েছিল।
ভদ্রেশ্বরের আরবি অ্যাভিনিউর বাসিন্দা দন্ত চিকিৎসক দেবু ঠাকুরের আইনজীবী কলকাতা হাইকোর্টে জানিয়েছেন, গত ২০ অগাস্ট সন্ধ্যায় তাঁর বাড়িতে হাজির হয় ২ সিভিক ভলান্টিয়ার। তারা ওই চিকিৎসককে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে এনকোয়ারি হবে। তাই এক্ষুণি চুঁচুড়া পুলিশ লাইনে যেতে হবে তাঁকে। কিন্তু চিকিৎসক জানান কীসের এনকোয়ারি না জানালে তিনি কিছুতেই যাবেন না। একথা শুনে ফিরে যান ২ সিভিক ভলান্টিয়ার। এর পর ঘটনার কথা ভদ্রেশ্বর থানায় ফোন করে জানান ওই দন্ত চিকিৎসক। অভিযোগ, এর পর থেকে লাগাতার তাঁর কাছে হুমকি ফোন আসতে থাকে। ২২ অগাস্ট ঘটনার কথা জানিয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগ তাতে তো কোনও কাজ হয়ইনি, উলটে ২৮ অগাস্ট তাঁর কাছে একটি নোটিশ এসে পৌঁছয়। সেই নোটিশে ফের তাঁকে সিপিসি অফিসে হাজিরা দিতে বলা হয়।
পুলিশের নোটিশ পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন দেবুবাবু। কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করেন মামলা। বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের এজলাসে সেই মামলার শুনানিতে পুলিশের আইনজীবী আদালতকে জানান, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দাঁতে ব্যথা হচ্ছিল। তাই ওই দন্ত চিকিৎসককে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। একথা শুনে বিচারপতি বলেন, একজন চিকিৎসককে ডেকে পাঠানোর এ কেমন পদ্ধতি। এভাবে প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে একজনকে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ডেকে পাঠানো যায় না। একথা বলে পুলিশের পাঠানো নোটিশ খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
তবে আইনজ্ঞদের মতে, পুলিশের অন্য কোনও মতলব ছিল। নইলে পুলিশ সুপারকে জানালেও তিনি কেন পদক্ষেপ করলেন না? সেসব প্রকাশ্যে এসে গেলে বিপদ আরও বাড়তে পারে বুঝে দাঁতে ব্যথার অজুহাত খাড়া করেছে তারা।