সৌরভ মাজি, বর্ধমান: পুজোর প্যান্ডেল গড়তে লাগানো হয়েছে সরকারি ত্রাণের ত্রিপল। খোদ পুরপ্রধানের পুজো বলেই পরিচিত মেমারি শহরের এই পুজো। তা নিয়ে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
মধ্য মেমারি সর্বজনীন দুর্গোৎসব। ৮ বছরে পড়ল মেমারি নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকার এই পুজো। মেমারি পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ী এই পুজো কমিটির সম্পাদক বলে স্থানীয়রা জানান। পুরপ্রধানের পুজো নামেই সবাই জানেন। ওই পাড়াতেই বাড়ি পুরপ্রধানের। শনিবার দেখা যায় এই পুজোর(Durga Puja 2024) প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ চলছে পুরোদমে। আর প্যান্ডেলের বাঁশের কাঠামোর উপর পলিথিনের ত্রিপল দিয়ে ঘেরার কাজ চলছে। আর সেই কালো রঙের ত্রিপলের উপর লাগানো রয়েছে সরকারি ছাপ। ‘বিশ্ব বাংলা’র লোগো দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার লেখা রয়েছে। এছাড়াও লেখা রয়েছে ‘দুর্গত মানুষের পাশে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তর’। এমনকি লেখা রয়েছে ‘নট ফর সেল’।
কিছুদিন আগেই পূর্ব বর্ধমান জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। এখন অবশ্য কিছুটা উন্নতি হয়েছে পরিস্থিতির। সরকারের তরফে দুর্গত মানুষদের ত্রাণ বিলি করা হয়। ঘর হারানোদের ত্রিপল দেওয়া হয়। কিন্তু অনেকের ক্ষোভ রয়েছে ত্রিপল না পাওয়া নিয়ে। আর সেই ত্রাণের ত্রিপল খোদ পুরপ্রধানের পুজোর প্যান্ডেল তৈরির কাজে ব্যবহার হওয়ায় তুমুল বিতর্ক উঠেছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, এটাও এক ধরনের চুরি। সংবাদমাধ্যম ছবি তুলছে। জেলা প্রশাসনের উচিত ওই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে এফআইআর করা।” মেমারির তৃণমূল বিধায়ক মধুসূদন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই কাজ হয়ে থাকলে খুবই অন্যায় হয়েছে। একেবারেই উচিত হয়নি।”
পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ গৌতম নন্দী সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, প্যান্ডেলে সরকারি ত্রাণের ত্রিপলের বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না। আর সদ্য দায়িত্ব নেওয়া জেলা শাসক আয়েশা রানি এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “এটা কোনওভাবেই করা যায় না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। এদিন রাতে পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ী অবশ্য ফোনে দাবি করেন, “পুজোর প্যান্ডেল তৈরিতে ত্রিপল ব্যবহার করা হয়নি। এদিন মণ্ডপে প্রতিমা এসেছে। বৃষ্টি হয়েছে। সেই কারণে এলাকার এক বাসিন্দা যিনি পুজো কমিটির সঙ্গে যুক্ত তিনি ওই ত্রিপল দিয়েছিলেন প্রতিমার মুখ ঢাকা দেওয়ার জন্য। ওই বাসিন্দা ত্রাণের ওই ত্রিপল পেয়েছিলেন।” তবে কে ত্রিপল দিয়েছিলেন তাঁর পরিচয় খোলসা করেননি পুরপ্রধান।