এই সময়, ঝাড়গ্রাম: প্রেমিকার আত্মহত্যার কথা জানতে পেরেই আত্মঘাতী প্রেমিক! মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সকালে ঝাড়গ্রাম থানার বাঁধগোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চিঁচুড়গেড়িয়া গ্রামে। মৃত প্রেমিকার নাম মৌসুমি মণ্ডল(১৬) এবং প্রেমিকের নাম পুষ্পেন্দু সিং (১৭)। মৌসুমি স্থানীয় হাইস্কুলের দশম শ্রেণির এবং পুষ্পেন্দু একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার সন্ধ্যাবেলায় নিজেদের মাটির বাড়ির দোতলায় মৌসুমির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তারপর সোমবার সকালে বাড়ির সামনে আম গাছে পুষ্পেন্দুর ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়। মুখোমুখি দু’টি বাড়ির কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু নিয়ে ধন্দে পড়েন গ্রামবাসীরা।
দু’জনের প্রেমের সম্পর্কের কথা তেমন ভাবে কেউই জানতেন না। কিন্তু এ দিনের জোড়া আত্মহত্যার পরে বিষয়টি জানাজানি হয়। এলাকাবাসীর অনুমান, প্রেমিকা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতেই প্রেমিকও ভোরবেলায় গলায় দড়ি দেয়।
এ দিন সকাল থেকেই গ্রামের পরিবেশ ছিল কার্যত থমথমে। মৌসুমির বাবা সুমন্ত মণ্ডল বলেন, ‘গতকাল বিকেলে আমি ও স্ত্রী বাড়ির বাইরে গিয়েছিলাম। সন্ধ্যাবেলায় ফিরে দোতলায় গিয়ে দেখি, মেয়ের ঝুলন্ত দেহ। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচাতে পারিনি। কেন এমন ঘটনা ঘটাল, তা বুঝতে পারছি না।’পুষ্পেন্দুর বাবা বুদ্ধেশ্বর সিং ছেলের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। বাঁধগোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শুভ্রা মান্ডি বলেন, ‘ঘটনাটি শোনার পর থেকেই হতবাক হয়ে গিয়েছি। এ ভাবে কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু ভাবতেই পারছি না।’
সোমবার দুপুরে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর পরিজনদের হাতে দু’জনের দেহ তুলে দেওয়া হয়। দু’টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে ঝাড়গ্রাম থানায়।
ঝাড়গ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) সৈয়দ মহম্মদ মামদুল্লাহ হাসান বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ছেলেটির সঙ্গে মেয়েটির ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। কিন্তু কেন দু’জনে আত্মহত্যা করল, তা জানার জন্য তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’