• বন্যার আশঙ্কার মধ্যে তর্পণের জন্য সতর্কতা মুর্শিদাবাদের ঘাটগুলিতে
    বর্তমান | ০১ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: রাত পোহালে মহালয়া। গঙ্গা ও ভাগীরথীর পাড়ে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণের জন্য হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হবেন। মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রায় ৫০টি ঘাটে তর্পণ হবে। এরই মধ্যে জেলাজুড়ে বন্যার সতর্কতা জারি হয়েছে। গঙ্গা ও পদ্মার পাশাপাশি ভাগীরথী নদীতে জলস্তর বাড়তে পারে। জল বৃদ্ধির আশঙ্কাকে মাথায় রেখে সমস্ত ঘাটে তর্পণ করার জন্য বন্দোবস্ত করেছে জেলা পুলিস ও প্রশাসন। বহরমপুর সদরের ১২টি ঘাটে সব থেকে বেশি জমায়েত করবেন পুণ্যার্থীরা। বেলডাঙা থানা এলাকায় পাঁচটি ঘাট, দৌলতাবাদে একটি, রেজিনগরের তিনটি, শক্তিপুরে তিনটি ঘাটে তর্পণের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এছাড়া, কান্দিতে দু’টি, ভরতপুরে দু’টি, মুর্শিদাবাদের ছ’টি, জিয়াগঞ্জ থানায় তিনটি, লালগোলায় একটি, নবগ্রামের দু’টি, জলঙ্গিতে একটি রানিনগরে একটি ও ইসলামপুরে দু’টি ঘাটে তর্পণ হবে। 


    জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, আমাদের পুলিস জেলায় মোট ৪৪টি ঘাটে তর্পণের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। প্রতিটি ঘাটে পর্যাপ্ত পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে। সিভিল ডিফেন্সের আধিকারিক ও কর্মীরাও সেখানে হাজির থাকবেন। 


    জানা গিয়েছে, জলস্তর বৃদ্ধির জেরে যাতে তর্পণ ব্যাহত না হয়, সেই কারণে বেশকিছু ঘাটে গঙ্গার কিছুটা দূরে বড় করে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। ব্যারিকেডের পাশে বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দপ্তরের বোট লাগানো থাকবে। যে সমস্ত ঘাটে অতিরিক্ত ভিড় হয় সেখানে মাইকিংয়ের ব্যবস্থা থাকছে। অনেকেই ভোররাত থেকে গঙ্গার পাড়ে আসতে থাকেন। তাই সেখানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মহিলাদের পোশাক পরিবর্তনের জন্য ছোট ছোট অস্থায়ী ঘর বানানো হয়েছে। 


    জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, দুই পাড়ের সদরঘাট সহ নিমতলা ও শিবতলার ঘাটে তর্পণ করবেন। ঘাটগুলিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার পাশাপাশি আলোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তপর্ণের সময়ে নজরদারি চালাতে সিভিল ডিফেন্সের কর্মী মোতায়েনের জন্য লালবাগ মহকুমা শাসককে বলেছি। 


    মুর্শিদাবাদ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদি আলম মির্জা বলেন, সদর, সাহানগর, ইচ্ছাগঞ্জ দুই পাড়ে মোট ছ’টি ঘাটে তর্পণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মানুষের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সেজন্য আমরা ঘাট আগে থেকে পরিষ্কার করেছি। ভাগীরথীর জলহস্তর বাড়তে পারে সেজন্য সজাগ থেকেই তর্পণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 


    জলস্তর বৃদ্ধিতে তর্পণ করতে অসুবিধে হবে কিনা তা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত পুণ্যার্থীরা। বহরমপুরের বাসিন্দা নিরাপদ ঘোষ বলেন, প্রতি বছর পরিবারের নিয়ম মেনে জগন্নাথ ঘাটে তর্পণ করতে যাই। এবার জানি না কী হবে। বন্যা সতর্কতা জারি হয়েছে তো। ভাগীরথীর জল বাড়লে কীভাবে জলে নামা যাবে বুঝতে পারছি না। 


    এক পুরোহিত সুজিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, কে এন কলেজ ঘাটে প্রচুর মানুষ তর্পণ করেন। ওইদিন সকালে ঘাটে আমরা সাধারণ মানুষকে সাহায্য করি। তর্পণের মন্ত্রপাঠ করে পুজো করি। এবার নদীর জল বাড়লে পুণ্যার্থীরা হয়তো কম আসবেন। এর ফলে আমাদের ক্ষতি হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)