উজ্জ্বল রায়, ধূপগুড়ি: ইচ্ছে ছিল মানুষের জন্য কিছু করার। সেই ইচ্ছেকে সামনে রেখে ধূপগুড়ির যুবক অলোক রায় তৈরি করেন ইচ্ছে ডানা ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠন। আর এই সংগঠনই গত ছ’বছরে চারশোর বেশি মহিলা সহ শতাধিক পুরুষকে স্বনির্ভর করতে পেরেছে। ইচ্ছে ডানা এই ইচ্ছে পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ায় এখন তাদের নাম ধূপগুড়ি সহ গোটা উত্তরবঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে। সময় হলেই ইচ্ছে ডানার সদস্যরা চলে যান চা বাগান সহ সীমান্তের প্রান্তিক এলাকায়। সেখানকার মানুষকে বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন করেন। গ্রামের মহিলাদের রোজগারের পথ করে দিতে প্রশিক্ষণ দেয় হাতের কাজের।
তবে শুরুতেই কাজটি সংগঠনের সদস্যদের পক্ষে মোটেই সহজ ছিল না। শুনতে হয়েছিল নানান টিপ্পনি। কয়েকজন মিলে সংগঠনের পথচলা শুরু হয়েছিল। সদস্য সংখ্যা এখন ১৭৩। সদস্যরা আলাদা আলদা দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে লক্ষ্যপূরণে ঝাঁপিয়েছেন। কেউ গ্রামের প্রান্তিক মানুষের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্যশিবির করেন, কেউ শনিবার করে স্কুল, কলেজে গিয়ে পড়ুয়াদের নিয়ে ক্যুইজ প্রতিযোগিতা করে তাঁদের সাধারণ জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করেন। আবার কারও দায়িত্ব নারী সুরক্ষায় মহিলাদের ক্যারাটে শেখানো।
ধূপগুড়ির কদমতলায় বৃদ্ধবৃদ্ধাদের নিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে তৈরি করা হয়েছে প্রবীণ সাক্ষরতা মিশন। সেখানে নিয়মিত এসে অক্ষরজ্ঞান শিখছেন অনেকেই। ষাটোর্ধ্ব মালতী রায়, চিরবালা রায় বলেন, ইচ্ছে ডানার জন্য শেষ বয়সে এসে অ-আ-ক-খ লিখতে শিখেছি। সংগঠনের অন্যতম কর্মকর্তা অঞ্জনা রায় বলেন, বছরের বিভিন্ন সময়ে আমরা বিভিন্ন এলাকায় চারাগাছ রোপণ করি। ধূপগুড়ি তথা ডুয়ার্সে রেকর্ড সংখ্যক গাছ আমরাই রোপণ করেছি। সংগঠনের সদস্য মিষ্টি জাহান, প্রসুন রায়, দীপ্তি রায়, রবিউল আলম বলেন, এবছরই ৬১ দিন ধরে আমাদের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি শিপ্রা সরকার, সহ সভাপতি রাজা দাস, মৈনাক শর্মা বলেন, মানুষের প্রয়োজনে আমরা পাশে আছি। সহ সম্পাদক চঞ্চল বর্মন বলেন, সারা বছর আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচি চলতে থাকে। আমরা সদস্যরা বিভিন্ন দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়ে লক্ষ্য পূরণের জন্য এগচ্ছি। অনেকেই হাতের কাজ শিখে স্বর্নিভর হয়েছেন। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা তথা সম্পাদক অলোক রায় বলেন, ইচ্ছে ডানা ইচ্ছে পূরণের লক্ষ্যেই এগিয়ে চলছে। নিজস্ব চিত্র