নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা, মানিকচক: প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ডিঙি নৌকার অবাধ ব্যবহার চলছে ভূতনিতে। নিয়ম না মানায় সোমবার ফের ডিঙি উলটে মৃত্যু হল একজনের। এদিকে গঙ্গার জল কিছুটা কমলেও বাড়ছে ফুলহার, মহানন্দার জলস্তর। নতুন করে প্লাবিত জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, গ্রামবাসীদের লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে তাঁরা সেগুলি ব্যবহার করছেন না।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র ভূতনিতেই পাঁচশো লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া প্রশাসনের তরফে ডিঙি নৌকা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়। প্রতিদিন সতর্ক করে ভূতনির বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করা হচ্ছে। এমনকী মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ফোনে গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বার্তাতে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ডিঙি নৌকা ব্যবহার না করার অনুরোধ করেছেন গ্রামবাসীদের। তা সত্ত্বেও বারবার ডিঙি নৌকা ব্যবহার করে বিপদ ডেকে আনছেন অনেকে।
সোমবার ভূতনির পুলিনটোলায় টিনের তৈরি ডিঙি নৌকা ডুবে মৃত্যু হয় জিতেন মণ্ডলের (৩১)। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন তাঁর দুই সন্তান। বন্যা পরিস্থিতিতে এনিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো দশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতের শ্যামসুন্দর টোলার বাসিন্দা জিতেন তাঁর দুই নাবালক সন্তানকে নিয়ে টিনের নৌকায় পুলিনটোলার দোকানে আসছিলেন। সেই সময় নিয়ন্ত্রণ হারালে নৌকাটি ডুবে যায়। স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে তড়িঘড়ি টিনের নৌকা নিয়ে উদ্ধার করেন দুই নাবালককে। তবে, দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালালেও জিতেনের হদিশ পাননি তাঁরা।
পরে গিয়ে সিভিল ডিফেন্স ও এনডিআরএফের দল অবশ্য জীতেনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। তাঁকে মানিকচক হাসপাতাল নিয়ে গেলে মৃত বলে জানান চিকিত্সক।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বৈদ্যনাথ মণ্ডল বলেন, প্রশাসন টিনের নৌকা চালানো নিয়ে সতর্ক করলেও স্থানীয়রা পেটের তাগিদে বাধ্য হচ্ছেন বের হতে। তার পরিণতি হিসেবে এই মর্মান্তিক ঘটনা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গঙ্গার জলস্তর চরম বিপদসীমা থেকে নেমে গেলেও বিপদসীমার ওপর দিয়েই বইছে। সোমবার সন্ধ্যা ছ’টায় মানিকচক ঘাটে গঙ্গার জলস্তর ছিল ২৪.৭৫ মিটার। যা বিপদসীমা থেকে ৬ সেন্টিমিটার বেশি। এদিকে নতুন করে চিন্তা বাড়াচ্ছে ফুলহার ও মহানন্দা। এদিন ফুলহারের জলস্তর ছিল ২৮.২৯ মিটার। যা চরম বিপদসীমা থেকে মাত্র ৬ সেন্টিমিটার নীচে। তবে জল বাড়লেও বিপদসীমায় পৌঁছয়নি মহানন্দা। এদিন মহানন্দার জলস্তর ছিল ২০.৪১ মিটারে। বিপদসীমা শুরু হয়েছে ২১ মিটার থেকে। শোকাহত পরিবার। - নিজস্ব চিত্র।