নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: ওঁরা কেউ গৃহবধূ। কেউ আবার অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। কেউ পেশাগতভাবেই ঢাকি। তবে প্রত্যেকেই তাকিয়ে থাকেন দুর্গাপুজোর দিকে, আগমনিতে ঢাকের বোল তোলার জন্য। কেননা, এই সময়েই বাড়ি ছেড়ে অন্য জেলা বা রাজ্যে গিয়ে মোটা উপার্জন হয় তাঁদের। এদিকে, আর জি কর কাণ্ডের জেরে এবার উৎসবের উৎসাহে কিছুটা হলেও ভাটা পড়েছে। তাই তরুণী চিকিৎসকের ন্যায়বিচার চাওয়ার পাশাপাশি উৎসবে ফেরার আহ্বানও জানাচ্ছেন মছলন্দপুরের মহিলা ঢাকিরা।
এঁদের সংখ্যা কমবেশি ৯০ জন। প্রতি বছর তাঁরা কলকাতা সহ উত্তরবঙ্গ, রাজ্যের একাধিক জেলা, এমনকী দিল্লি, মুম্বই, অসম, ভূপালে যান। অনেক আগে থেকেই তাঁদের বুকিং হয়ে যায়। কিন্তু এবছর আর জি কর কাণ্ডের জেরে অনেকেরই উৎসবের দিকে মন নেই। কিন্তু এই উৎসব থেকেই সারা বছরের রুটি-রুজি মেলে মছলন্দপুরের মহিলা ঢাকিদের। তাই তাঁরাও মুখ্যমন্ত্রীর কথার রেশ টেনেই বলছেন, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। কিন্তু উৎসবেও ফিরুক মানুষ। তাহলে আমাদের সংসার বাঁচবে।
মছলন্দপুরের স্টেশন থেকে কিছুটা দূরে মহিলাদের ঢাক বাজানো শেখান গোকূল দাস। এই মহিলা ঢাকিদের একজন অনিতা দাস বলেন, আমি মুম্বই যাব বাজাতে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির কারণে আমাদের অবস্থা খুব খারাপ। বিগত তিন মাস ধরে আমাদের প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু অন্যান্য বারের তুলনায় এবার হাতে বায়না কম। আরেক ঢাকি মৌমিতা দাস বলেন, আমাদেরও তো সংসার আছে। দুর্গাপুজোর কাজই আমাদের মূল ভরসা। এটার উপর ভরসা করেই সারা বছরের রুটিরুজি অনেকটা নির্ভর করে। তাই ন্যায়বিচার চাওয়ার পাশাপাশি সকলকে উৎসবে ফেরার আহ্বানও জানাচ্ছি।
এবিষয়ে মহিলা ঢাকিদের প্রশিক্ষক গোকূলচন্দ্র দাস বলেন, প্রতিবছরই আমরা কাজের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে থাকি। এবছরও তাই হয়েছে। সেই মতো আমাদের দলের মহিলারা বাইরে কাজে যাবার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু আর জি কর কাণ্ডে কিছুটা হলেও আমাদের মতো মানুষের জন্য বায়না কমে গিয়েছে। ঢাকের পাশাপাশি ঢোলের ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি। পেটে টান পড়েছে অনেক মানুষের। তাই আমরা দোষীদের কঠোর যেমন শাস্তি চাই, একইভাবে মানুষকে বলব উৎসবে ফিরুন। তাহলে অনেক মানুষের উপকার হবে।