• কোচবিহারকে কি আলাদা গুরুত্ব মুখ্যমন্ত্রীর, শুরু জল্পনা
    আনন্দবাজার | ০১ অক্টোবর ২০২৪
  • এ বার উত্তরবঙ্গ সফরে কোচবিহারকে অধিক গুরুত্ব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠক করেন। সেখানে দার্জিলিং-জলপাইগুড়ি বাদেও কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক কর্তারা যোগ দেন। সেই বৈঠকে কোচবিহার জেলা থেকেই সব থেকে বেশি জনপ্রতিনিধিকে হাজির হতে দেখা যায়।

    মুখ্যমন্ত্রী যখন সাংবাদিক বৈঠক করেন, সেখানেও কোচবিহারের তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। মুখ্যমন্ত্রীর এক পাশে বসেছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, আর এক পাশে সামান্য পিছনের চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহকে। মুখ্যমন্ত্রীর উল্টো দিকে আরও দুটি চেয়ারে বসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং অভিজিৎ দে ভৌমিককে। রবীন্দ্রনাথ কোচবিহারের পুরপ্রধান, অভিজিৎ কাউন্সিলরের পাশাপাশি তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি। সেই ঘরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়কে। তিনি তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ। এ ছাড়াও, ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের কোচবিহারের সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। সূত্রের খবর, বাকি অন্য জেলার নেতাদের বেশির ভাগই বাইরে ছিলেন। হাতেগোনা দুই-এক জন ছিলেন ভেতরে।

    রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের মধ্যে এক মাত্র কোচবিহার আসনটিতেই জয়ী হতে পেরেছে তৃণমূল। এ বার লোকসভা ভোটের আগে উত্তরবঙ্গের প্রত্যেকটি জেলা চষে বেড়ান মুখ্যমন্ত্রী। আলাদা ভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও একের পর এক সভা করেন। তাতে কোথাও কোনও লাভ না হলেও কোচবিহারে বিজেপির হেভিওয়েট প্রার্থী প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিককে হারিয়ে দেয় তৃণমূল। তাতেই তৃণমূলের কোচবিহার জেলা-নেতাদের প্রতি আস্থা আরও বেড়ে যায় মুখ্যমন্ত্রীর। তারই প্রতিফলন ওই বৈঠকে দেখা যায় বলে মনে করা হচ্ছে। দল মনে করছে, নবীন এবং প্রবীণ দুই প্রজন্মকেই সমান ভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক বৈঠকের পরে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে আলাদা ভাবে ডেকে নিয়ে গিয়েও কথা বলেন মমতা।

    লোকসভা নির্বাচনের আগে কোচবিহার নিয়ে খুব একটা খুশি ছিলেন তৃণমূল নেত্রী। দলের জেলা নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্বে কোচবিহারে দুর্বল হয়ে পড়েছিল দল। এ জন্যেই একাধিকনবার জেলা সভাপতি বদল করা হয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই কোচবিহারের সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখভালের দায়িত্ব নেন। উদয়ন গুহ থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথকে একাধিক বার সতর্ক করেছিল দল। এ বার অবশ্য অন্য চিত্র দেখা গেল। তা নিয়ে খুশি তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রত্যেকের এক কথা, “মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে নির্দেশ দেবেন, সে ভাবেই আমরা কাজ করব।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)