• রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষার প্রশ্নে আরজি কর-কাণ্ড! বিতর্ক পূর্ব মেদিনীপুরের স্কুলে, তৃণমূল বলল, ‘ষড়যন্ত্র’
    আনন্দবাজার | ০১ অক্টোবর ২০২৪
  • আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের প্রসঙ্গ উঠে এল একাদশ শ্রেণির প্রশ্নপত্রে। সোমবার এ নিয়ে রাজনৈতিক শোরগোল পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার একটি প্রথম সারির স্কুলে। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, ‘এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত’! যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ের ওই প্রশ্ন নিয়ে কেউ কোনও লিখিত অভিযোগ জানাননি।

    স্থানীয় সূত্রে খবর, একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরীক্ষা ছিল দিন পাঁচেক আগে। সেখানে একটি প্রশ্ন ছিল, ‘‘শিক্ষা আমার মৌলিক অধিকার। আমি অভয়া অনেক আশা ও স্বপ্ন নিয়ে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার। আমাকে মেডিক্যাল কলেজের মধ্যে পাশবিক অত্যাচার করে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে খুন করা হয়েছে। আমার সঠিক বিচার হোক। উপরে বর্ণিত শিকার অধিকারটি সংবিধানের কোন ধারায় আছে?’’ এর পর চারটি ‘অপশন’ দেওয়া হয়। কিন্তু যে বিষয় ঘিরে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল, যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বিচার চলছে, সেটা কেন স্কুলের পরীক্ষায় প্রশ্নে ঠাঁই পেল, প্রশ্ন উঠেছে।

    আরজি কর মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা নিয়ে চলছে শুনানি। তার মধ্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ওই প্রশ্নপত্র সমাজমাধ্যমে ভাইরাল। এ নিয়ে ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক দেবাশিস জানা বলেন, “কয়েক দিন আগে একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। সেখানে এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয় উল্লেখ করে প্রশ্ন হয়েছে বলে এখন বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানতে পারছি। কী হয়েছে, তা আমার জানা নেই।” তাঁর সংযোজন, “স্কুলের পরীক্ষার প্রতিটি বিষয়ে প্রশ্ন তৈরির দায়িত্ব সেই বিষয়ের শিক্ষকের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে ওই শিক্ষক প্রশ্নপত্র তৈরি করেন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।” অন্য দিকে, এমন প্রশ্নের পিছনে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক বা শিক্ষকদের ‘গোপন অভিসন্ধি’ রয়েছে বলে দাবি করেছেন এগরার তৃণমূল বিধায়ক তরুণকুমার মাইতি। তিনি বলেন, “আরজি করের ঘটনা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনায় তৃণমূলের পাশাপাশি রাজ্য সরকারও বিচারের দাবিতে সরব। ঘটনার তদন্তভার এখন সিবিআইয়ের হাতে। দেশের শীর্ষ আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। এই পরিস্থিতিতে এমন পাশবিক ঘটনা স্কুলের প্রশ্নপত্রে লেখার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দাজনক।” বিধায়কের আরও বলেন, “দেশ জুড়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন নৃশংস ঘটনা ঘটে চলেছে। তা কখনও পাঠ্যপুস্তকে লেখা হয় না। আর আরজি করের পাশাপাশি উন্নাও, হাথরস বা মণিপুরে মহিলাদের উপর পাশবিক অত্যাচারের ঘটনা ঘটেছে। গোটা দেশকে তা নাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু ওই বিষয়গুলি স্কুলের বইতে লেখা হলে তা শিশু, কিশোর বা যুবসমাজে বিরূপ প্রভাব ফেলে।”

    স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)