এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-র গ্রুপ পর্বে ট্র্যাক্টর এসসি বনাম মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের খেলা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত। ২ অক্টোবর ইরানের তাবরিজ়ে এই ম্যাচ হওয়ার কথা। রবিবার বেঙ্গালুরু থেকেই রওনা হওয়ার কথা ছিল মোহনবাগানের। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদলে কলকাতায় ফিরে আসছেন দিমিত্রি পেত্রাতস, জেসন কামিংসরা।
কেন? ইরানের পরিস্থিতি এখন অস্থির। ইজ়রায়েলের হামলায় ইরানের মদতপুষ্ট সশস্ত্র সংগঠন হিজ়বুল্লার প্রধান সৈয়দ হাসান নাসরাল্লার মৃত্যু হয়েছে। পাঁচ দিনের শোক পালনের ঘোষণা হয়েছে ইরানে। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সবুজ-মেরুন শিবিরে। মোহনবাগানের তরফে ইতিমধ্যেই এএফসি ও এআইএফএফ-কে ই-মেল করে বলা হয়েছে, ‘‘বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ইরানের বর্তমান উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি। পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় শোকপালন নিয়েও ওয়াকিবহাল। এ ছাড়াও সমাজমাধ্যমের সূত্রে অন্যান্য অস্থির পরিস্থিতির খবর পেয়েছি। আমাদের কাছে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ফুটবলার ও দলের বাকি সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ইরান-যাত্রা নিয়ে এএফসি-র পরামর্শের অপেক্ষায় রয়েছি।’’ এর পরেই পুরো দলকে কলকাতায় ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানেও সমস্যা তৈরি হয়। কারণ, এক বিমানে সকলের টিকিট পাওয়া যায়নি।
মোহনবাগানের সচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, ‘‘ইরানের পরিস্থিতি এই মুহূর্তে ভয়ঙ্কর। আমাদের প্রধান কর্তব্য ফুটবলার-সহ দলের প্রতিটি সদস্যের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। ইতিমধ্যেই এএফসি, এআইএফএফ এবং বিদেশ মন্ত্রককে জানিয়েছি। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কী হয়।’’ নিরপেক্ষ কেন্দ্রে এই ম্যাচ আয়োজন করার অনুরোধও করা হয়েছে। কিন্তু এএফসি এখনও পর্যন্ত কিছু জানায়নি। এর আগে শোনা গিয়েছিল, বিদেশি ফুটবলারদের ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছিল। রবিবার অবশ্য জানা গিয়েছে, সেই সমস্যা মিটে গিয়েছে।
মোহনবাগান যদি শেষ পর্যন্ত ট্র্যাক্টরের বিরুদ্ধে খেলতে ইরান না যায়, কড়া শাস্তির মুখে পড়তে পারে। বিরাট অঙ্কের আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি নির্বাসনের সম্ভাবনাও রয়েছে। এই কারণেই মোহনবাগানের তরফে সরকারি ভাবে ইরান সফর বাতিল করার ঘোষণা করা হচ্ছে না। এক কর্তা বললেন, ‘‘বেঙ্গালুরু থেকেই ইরান উড়ে যাওয়ার কথা ছিল দলের। তাবরিজ়ের হোটেলও বুক করা রয়েছে। কিন্তু ইরানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে দলকে কলকাতায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। দেখা যাক, এএফসি কী বলে।’’
ইরান-যাত্রা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যেই কোচ হোসে মলিনাকে নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে সমর্থকদের মধ্যে। শনিবার রাতে বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে ০-৩ গোলে বিপর্যয়ের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে স্পেনীয় কোচ বলেছিলেন, ‘‘প্রতিপক্ষের গোলের সামনে নিখুঁত ফুটবল খেলতে পারিনি। গোল করতে না পারলে ম্যাচ জেতা সম্ভব নয়। ব্যর্থতা ভুলে সামনের দিকে তাকাতে হবে।’’