তৃণমূল-দূরত্ব মোছার প্রসঙ্গই নেই শুভঙ্করের প্রথম বৈঠকে
এই সময় | ০১ অক্টোবর ২০২৪
মণিপুস্পক সেনগুপ্ত
প্রদেশ সভাপতির চেয়ারে বসে সোমবারই প্রথম জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করলেন অধীর চৌধুরীর উত্তরসূরি শুভঙ্কর সরকার। মূল উদ্দেশ্য, দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীদের মনোভাব আঁচ করা।সূত্রের খবর, জেলা সভাপতিদের কাছে শুভঙ্কর জানতে চান, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বাংলায় কংগ্রেসের পথ কী হওয়া উচিত? দু’ধরনের মত উঠে আসে। বেশ কিছু জেলার সভাপতি একলা চলোর পক্ষে সওয়াল করেন। তাঁরা দলের নতুন সভাপতিকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, বামেদের সঙ্গ ছাড়লে রাজ্যে কংগ্রেসের আসল শক্তিটাও যেমন বোঝা যাবে, তেমনই বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে বঙ্গ-রাজনীতিতে কংগ্রেসের প্রাসঙ্গিকতাও বাড়বে। যদিও জেলা সভাপতিদের একটি বড় অংশের দাবি, এখনই বাম-সঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসা ঝুঁকিপূর্ণ। তাতে বিরোধী ভোট আরও ভাগ হয়ে তৃণমূলের হাত শক্ত হবে।
তাৎপর্যপূর্ণ হলো, কংগ্রেসের একজন জেলা সভাপতিও বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব কমানোর কথা বলেননি শুভঙ্করকে। নতুন প্রদেশ সভাপতিও নিজের মতামত জেলা সভাপতিদের উপরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেননি। এ প্রসঙ্গে এক প্রদেশ কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘অধীর চৌধুরীকে সরিয়ে শুভঙ্করকে প্রদেশ সভাপতি করতেই বিভিন্ন মহল প্রচার করতে শুরু করে, বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতেই প্রদেশ সভাপতি বদল করেছেন মল্লিকার্জুন খাড়গেরা। এই তত্ত্ব যে ভুল, সেটা খুব তাড়াতাড়ি প্রমাণ হয়ে যাবে।’
সামনে বেশ কিছু বিধানসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন হওয়ার কথা। সেখানে কী কৌশল নিলে তৃণমূলকে চাপে ফেলা যায়, সে বিষয়েও সংশ্লিষ্ট জেলা সভাপতিদের দ্রুত মতামত দিতে বলেছেন শুভঙ্কর। তাঁর ঘনিষ্ঠ এক কংগ্রেস নেতার মন্তব্য, ‘জেলা সভাপতিদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার নতুন সংস্কৃতি চালু হতে চলেছে প্রদেশ কংগ্রেসে।’
অধীরের অনুপস্থিতিতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দলের সুর আদৌ কতটা চড়বে, তা নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের বহু শীর্ষ নেতা-নেত্রীর মনেই সংশয় তৈরি হয়েছিল। এ দিন তাঁদের কিছুটা আস্বস্ত করে আরজি কর ইস্যুতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন শুভঙ্কর। শহরের পাশাপাশি গ্রামেও এই ইস্যুতে বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের নির্দেশ জেলা সভাপতিদের দিয়েছেন শুভঙ্কর। এ দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে আরজি কর ইস্যুতে রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে বিক্ষোভ কর্মসূচি হবে।