• ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়ে ‘ধর্ষণ’, গ্রেপ্তার যুবক
    এই সময় | ০১ অক্টোবর ২০২৪
  • বর্ধমানের মেমারি এলাকার এক তরুণের সঙ্গে কলকাতার একবালপুরের তরুণীর বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। হবু বর-কনে ফোনে কথাবার্তাও বলছিলেন। আচমকাই তরুণের বাড়ি বিয়ে দেবে না বলে বেঁকে বসে। বিষয়টি মানতে পারেননি তরুণী।বাড়ির অমতেই তরুণের সঙ্গে যোগাযোগ চালাচ্ছিলেন তিনি। যদিও তরুণের তরফে তেমন সাড়া মিলছিল না। গত শনিবার দুপুরে বাড়িতে লুকিয়ে হাওড়া থেকে বর্ধমানের ট্রেনে চাপেন মরিয়া তরুণী। তাঁর ফোন কেটে দিচ্ছে দেখে যাত্রাপথেই কয়েকজনের মোবাইল থেকে তরুণটিকে কল করেন। অভিযোগ, মেয়েটির গলা শুনেই লাইন কেটে, ফোন বন্ধও করে দেন ওই তরুণ। এ দিকে মেয়ের খোঁজ না পেয়ে কলকাতায় একবালপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে তরুণীর পরিবার।

    শনিবার রাত ১১টা নাগাদ বর্ধমান স্টেশনে নেমে কার্যত অথৈ জলে পড়েন তরুণী। স্টেশনে এক জায়গায় বসেছিলেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় প্রদীপ জর নামে এক যুবকের। প্রদীপের ফোন থেকেও মেমারিতে ওই তরুণকে ফোন করেন মেয়েটি। কিন্তু সাড়া মেলেনি। প্রদীপ প্রতিশ্রুতি দেয়, ছেলেটির কাছে পৌঁছে দেবে তরুণীকে।

    এ পর্যন্ত ঘটনাটা অনেকটা ‘জব উই মেট’ ফিল্মের মতো হলেও পরের অধ্যায়ের সঙ্গে সুপারহিট ছবির মিল নেই। জানা গিয়েছে, রবিবার ভোরে মেয়েটিকে নিয়ে দেবীপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠে প্রদীপ। আত্মীয়দের জানায়, মেয়েটি তার পূর্বপরিচিত। সেখান থেকে মেয়েটি মেমারির ছেলেটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে সফল হন। জানান, তিনি দেবীপুরে আছেন। তাঁর কাছে যেতে চান।

    অভিযোগ, রবিবার দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পরে মেয়েটিকে ঘরে নিয়ে গিয়ে প্রদীপ পরপর দু’বার ধর্ষণ করে। পুলিশ জানিয়েছে, এই তথ্য না জেনেই ওই ছেলেটি মেমারি থানায় ফোন করে মেয়েটির ব্যাপারে জানান। পুলিশ জানতে পারে, একবালপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে। খবর যায় মেয়েটির বাড়িতে। তাঁর মা-বাবা মেমারি পৌঁছন। মেয়ের কাছে প্রদীপের কীর্তির কথা শুনে থানায় অভিযোগ জানান মেয়েটির মা।

    বর্ধমান দক্ষিণের এসডিপিও অভিষেক মণ্ডল বলেন, ‘ফোনের লোকেশন সার্চ করে রাতেই প্রদীপকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।’ স্থানীয় একটি কারখানায় চটের ব্যাগ তৈরির কাজ করে সে। বাড়ি কালনার আনুখাল এলাকায়। বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। সোমবার তাকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠান।

    অভিযোগকারিণীর মেডিক্যাল টেস্ট করিয়ে তাঁকে কলকাতায় একবালপুরের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। টেস্টের রেজ়াল্টের ব্যাপারে অবশ্য বিস্তারিত জানায়নি পুলিশ। তদন্তকারীদের একটি সূত্রে দাবি, তরুণীর কিছু মানসিক সমস্যা রয়েছে। সম্ভবত সেই সুযোগই নিয়েছেন অভিযুক্ত।
  • Link to this news (এই সময়)