রমেন দাস: আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের পর একই হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হল কেন? এই প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টেও যথেষ্ট ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। এই অভিযোগও উঠেছে, ময়নাতদন্তে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের অনেকেইস সন্দেহভাজন। এসব নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কও হয়েছে। তা সামলাতে কর্তৃপক্ষের পালটা দাবি ছিল, ‘অভয়া’র ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তাঁর সহকর্মী অর্থাৎ আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের সই ছিল। যদি তা ‘ত্রুটিপূর্ণ’ই হয়, তাহলে কেন তাঁরা সই করলেন? এনিয়ে শাসকদল তৃণমূল সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তাঁদের ‘দ্বিচারিতা’ নিয়ে সমালোচনা করেছে। সোমবার রাতভর জেনারেল বডি মিটিংয়ের পর মঙ্গলবার ভোরে সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁরা এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন। ঘটনার দিন ময়নাতদন্ত নিয়ে ঠিক কী কী ঘটেছিল, তা জানালেন জুনিয়র চিকিৎসক তথা আন্দোলনকারীদের অন্যতম মুখ কিঞ্জল নন্দ।
মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক থেকে আবারও পূর্ণ কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট। ১০ দফা দাবি নিয়ে আবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির পথে হেঁটেছেন তাঁরা। এদিন এই বৈঠকেই ময়নাতদন্তের নথিতে জুনিয়র ডাক্তারদের সই নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন কিঞ্জল নন্দ। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার দিন অর্থাৎ ৯ অগস্ট সকালে আমরা প্রথমে খবর পাই, চেস্ট বিভাগের সেমিনার রুমে এক পিজিটি ছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন। আমরা সেখানে যাই। গিয়ে বুঝতে পারি, আত্মহত্যা নয়, খুন করা হয়েছে তাঁকে। তখনই আমরা ময়নাতদন্তের জন্য চাপ দিই। আমরা চেয়েছিলাম, একটা খুনের ঘটনাকে যাতে আত্মহত্যার দিকে গড়িয়ে দেওয়া না হয়। আমাদের সই ছিল ময়নাতদন্তের নথিতে। তবে তা নিয়ে অযথা বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।”
এর পর কিঞ্জল বলেন, ”ময়নাতদন্ত নিয়ে সমাজমাধ্যমে কিছু বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। ওই চিকিৎসকের ময়নাতদন্ত হয়েছিল বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে। ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের উচ্চ আধিকারিকদের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত হয়। ওখানে জুনিয়র ডাক্তারদের সই থাকলেও ময়নাতদন্তে স্বচ্ছতার দায় আমাদের নয়। আমরা চেয়েছিলাম শুধু যেন কোনওভাবেই ওই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া না হয়। আমাদের স্বল্প জ্ঞানে সেই চেষ্টাই করেছিলাম। সমাজমাধ্যমে যে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে, তার তীব্র নিন্দা জানাই।’’