আবার জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। আজ, মঙ্গলবার থেকে তা শুরু হয়ে গিয়েছে। নানা দাবি তোলা হয়েছে। তবে মহালয়ার প্রাক্কালে এমন কর্মবিরতির ডাক মানুষকে সমস্যায় ফেলতে পারে। কিন্তু রবিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ মিছিলের মধ্যে থেকে ‘কাশ্মীর মাঙ্গে আজাদি’ স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এবার তার জল অনেকদূর পর্যন্ত গড়াল। কারণ অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে এই ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট নয়াদিল্লিতে পাঠাল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশের পর রবিবারের ঘটনার অনুসন্ধান করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্তারা। সোমবার সেটার প্রাথমিক রিপোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
আরজি কর হাসপাতালে তরণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় সুবিচারের দাবিতে মঙ্গলবার থেকে আবার কর্মবিরতি শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের আগের ৯৯ শতাংশ দাবি মেনে নেওয়া হয়েছিল। সেই জট কেটেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করার পর। তবে রবিবার পথে নেমে উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগানের পরিবর্তে কাশ্মীর মাঙ্গে আজাদি স্লোগান বিতর্কের সূচনা করেছে। আর তাই পাটুলি থানায় দেশদ্রোহিতার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করে ঘটনার তদন্ত করছে কলকাতা পুলিশ। পৃথক তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সিও। এজেন্সির পক্ষ থেকে শাহের মন্ত্রকে প্রাথমিক রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।
নিরাপত্তার স্বার্থে সুরজিৎ করপুরকায়স্থর নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী কমিটি গড়ে তুলল নবান্ন। আবার স্বাস্থ্যভবন একটি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গড়ে তুলেছে। সেটা ‘থ্রেট কালচার’ তদন্ত করার জন্য। আর এই আবহে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর, ওই মিছিলের উদ্যোক্তাদের পরিচয়, স্লোগান দেওয়া ব্যক্তিদের পরিচয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত না বিক্ষিপ্ত ভাবে ওই স্লোগান—সবকিছু জানতে চাওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে যে রিপোর্ট সংগ্রহ করা গিয়েছে তা পাঠানো হয়েছে নয়াদিল্লিতে। জম্মু ও কাশ্মীরে ভোট চলছে। তার মধ্যে কলকাতার বুকে ‘কাশ্মীর মাঙ্গে আজাদি’ স্লোগানের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।
এই বিষয়টি নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কয়েকজন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী কেন্দ্রীয় এজেন্সির আতসকাচের তলায় রয়েছেন। এই স্লোগানের সঙ্গে জড়িত ১৫–২০ জনকে চিহ্নিত করে ছবি–সহ বিস্তারিত তথ্য অমিত শাহের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে পাঠিয়ে দিয়েছেন গোয়েন্দারা। সেখানে দেশবিরোধী আন্দোলনে সরব হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ৩৭০ এবং ৩৫এ অনুচ্ছেদের অবলুপ্তির পর প্রথমবার কাশ্মীরে ভোট হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের একেবারে বিপরীত প্রান্তে দেশবিরোধী স্লোগান গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।