সুমন করাতি, হুগলি: তন্ত্রসাধনার জন্য নাতনিকে তান্ত্রিকের হাতে তুলে দিয়েছিলেন দিদিমা। তার পর শিশুকন্যার মর্মান্তিক পরিণতি হয়। তাকে ধর্ষণের পর খুন করে তান্ত্রিক। তাতে সাহায্য করেছিল স্ত্রী। বছর চারেক আগের ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। বিচার চলাকালীন মূল অভিযুক্ত তান্ত্রিকের মৃত্যু হয়। বাকি দুজনের মধ্যে তান্ত্রিকের স্ত্রীকে ফাঁসির সাজা শোনাল আরামবাগ মহকুমা আদালত। মৃত শিশুকন্যার দিদিমাকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনা ২০১৮ সালে দোসরা ফেব্রুয়ারির। হুগলির খানাকুলের রাধাবল্লভপুর এলাকার এক শিশুকন্যাকে তার দিদা প্রতিবেশীর হাতে তুলে দিয়েছিল তন্ত্রসাধনার জন্য। ওই তান্ত্রিকের নাম মুরারি পণ্ডিত। অভিযোগ ওঠে, ওই তান্ত্রিক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে খুন করে। তার পর পাশের একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কে তার দেহ লোপাট করে। এই ঘটনায় মুরারিকে সাহায্য করেছিল তার বউ সাগরিকা পণ্ডিত।
এর পর ওই শিশুর খোঁজ না পেয়ে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে খানাকুল থানার পুলিশ। হাত-পায়ে গামছা বাঁধা অবস্থায় তার দেহ উদ্ধার হয় ওই সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে। শিশুর বাবা খানাকুল থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তান্ত্রিক মুরারি পণ্ডিত, তার স্ত্রী সাগরিকা পণ্ডিত ও শিশুর দিদাকে গ্রেপ্তার করে। বিচার চলাকালীন বেশ কয়েক মাস আগে মুরারি পণ্ডিতের মারা যায়। এদিন আরামবাগ মহকুমার অতিরিক্ত দায়রা পকসো আদালতের বিচারক কিষাণ কুমার আগরওয়াল এই মামলার সাজাঘোষণা করেন। সাগরিকা পণ্ডিতকে ফাঁসির সাজা শোনানো হয়। শিশুর দিদিমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। অনাদায়ে ৩০০০০ টাকার জরিমানা করেন। এ এক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এতদিনে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন পরিবারের সদস্যরা।