এই সময়: আজ, বুধবার মহালয়া। তার আগে মঙ্গলবার এ বছরের শারদোৎসবের সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন লেকটাউনের শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের পুজোমণ্ডপে যান মুখ্যমন্ত্রী, সকলকে শাম্তিতে উৎসবে সামিল হতেও বললেন। কিন্তু, তার মধ্যেও মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনায় রয়েছে রাজ্যের প্লাবিত এলাকাগুলির দুরবস্থা। তাই এই উৎসবের মরশুমে দুর্গতদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আবেদন জানান তিনি।তবে মমতা এ দিন স্পষ্ট করে দেন, তিনি পুজোর উদ্বোধন করলেন না। আজ, বুধবার তিনি ভার্চুয়ালি পুজোর উদ্বোধন করবেন। তৃণমূলের মুখপত্রের শারদ সংখ্যা প্রকাশেরও অনুষ্ঠান হবে আজ। উৎসব সূচনার মঞ্চ থেকে এ দিন দুই দমকল কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন তিনি। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হলেও এ দিন বিকেল থেকেই শ্রীভূমিতে দর্শনার্থীদের ভিড় শুরু হয়ে যায়।
শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের পুজোটি রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর পুজো হিসেবেই চিহ্নিত। এ দিন সেই পুজোর মণ্ডপ থেকে উৎসবের সূচনা অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মমতা ভার্চুয়ালি আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়া, বীরভূমের দুবরাজপুরের দু’টি দমকল কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।
তার সঙ্গে ৫০টি অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা যুক্ত মোটরবাইকের উদ্বোধনও করেন মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসু, সাংসদ পার্থ ভৌমিক, সৌগত রায়, বিধায়ক সুপ্তি পান্ডে, নির্মল ঘোষ, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী। ছিলেন সঙ্গীত শিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠানে মমতা বলেন, ‘আমি কিন্তু পুজোর উদ্বোধন করলাম না। আমি কেবল শারদোৎসবের সূচনা করলাম। কাল (বুধবার) দেবী পক্ষের শুরু। কাল থেকে আমি উদ্বোধন করব।’ তাঁর সংযোজন, ‘অনেকে বলেন, আমি নাকি মহালয়ায় পুজোর উদ্বোধন করি। সেটুকু জ্ঞান আমার নিশ্চয়ই আছে। আমি কেবল উৎসবের সূচনা করি।’ সকলকে যার যার মতো উৎসবের সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মমতা রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘এ বার উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গে বন্যা হয়েছে। আমি ত্রাণ দেওয়া থেকে শুরু করে সব কিছুই করেছি। এমনকী, এ বার আমরা দলের নামও ব্যবহার করিনি। সবটাই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে করার চেষ্টা করেছি। আমার অনেক সহকর্মী সাহায্য করেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘একটা জায়গায় কিচেন তৈরি করে খাবার দেওয়া যায়। আমরা চাল-ডাল-আলু-দুধের প্যাকেট সব দিয়ে ছেলেমেয়েদের দিয়ে প্যাকেট করিয়েছি। এটা কিন্তু ম্যানমেড বন্যা। তৈরি করে দেওয়া।’
সব শেষে ফের শ্রীভূমি স্পোর্টিংয়ের পুজো ভিড়ের কথা উদ্যোক্তাদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে মানুষের অসুবিধা যাতে না হয়, সে দিকে লক্ষ্য রাখার কথা বলেন। এর আগেও শ্রীভূমির পুজোর ভিড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সতর্ক করেছেন সুজিত-সহ উদ্যোক্তাদের।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রীভূমির পুজো ফেমাস। ফলে এখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ আসেন পুজো দেখতে। আমি বলব, ট্র্যাফিক ব্যবস্থা যেন ঠিকঠাক থাকে। আগের বার আপনারা খুব কেয়ার করেছিলেন। এ বারও দয়া করে কেয়ার করবেন। কারণ, এয়ারপোর্ট যাওয়ার রাস্তা এটা। তাই যাত্রীরা যাতে কেউ বিমান মিস না করেন, তা দেখার কর্তব্য আমাদের।’