এই সময়: টানা কয়েক দিন কড়া রোদ আর ঘাম ঝরানো গরম এক রকম ভুলিয়েই দিয়েছিল হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস। বৃষ্টির পালা শেষ হতেই শুকনো আবহাওয়ায় ভর করে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ ফিরে পেয়েছিল পুরোনো ছন্দ। হইহই করে শুরু হয়েছিল পুজোর শপিংও। এমন সময়েই ছন্দপতন।মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত চড়া রোদ পাওয়ার পর কয়েক মিনিটের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা ঢেকে গেল মেঘে। মাঝেমধ্যেই শোনা গেল বাজের গর্জন। কোথাও কোথাও তেড়ে বৃষ্টিও হলো কিছুক্ষণের জন্যে। প্রথমে মহালয়া এবং তার পর ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত—অর্থাৎ গোটা পুজোতেই রাজ্যের সর্বত্র বৃষ্টির পূর্বাভাস অবশ্য দিয়েই রেখেছিলেন আবহবিদরা। তবে কি সেই পূর্বাভাস মেলানোর তোড়জোড়ই শুরু হলো?
সোমবার মৌসম ভবন প্রকাশিত উপগ্রহচিত্র দেখিয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপরে রয়েছে ঘন মেঘের আস্তরণ। উত্তর আন্দামান সাগর, মার্তাবান উপসাগর এবং আরাকান উপকূল বরাবর জমে ওঠা ওই মেঘই চিন্তা বাড়াচ্ছে মৌসম ভবনের কর্তাদের। এই এলাকায় জমা হওয়া মেঘের স্তম্ভের একেবারে উপরের দিকের স্তরের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের চেয়ে ৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৯৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাঘুরি করছে বলে জানা যাচ্ছে। এই মেঘের স্তম্ভই কি গোটা বাংলার পুজো নষ্ট করবে?
আবহাওয়া-বিশারদ রবীন্দ্র গোয়েঙ্কা বলছেন, ‘উত্তর ও পশ্চিম ভারতে এক সপ্তাহ আগে থেকেই দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর অপসারণ পদ্ধতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাংলায় এখনও পর্যন্ত তার লক্ষণ নেই। মাঝে কয়েক দিন বৃষ্টি হয়নি ঠিকই, কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় স্তরে মেঘ জমছে।’
তিনি মনে করছেন, সপ্তাহের শেষ দিকে অর্থাৎ শনি-রবিবার নাগাদ নতুন করে বৃষ্টির পর্ব শুরু হবে বাংলার বিভিন্ন জায়গায়। তাঁর কথায়, ‘সাধারণত বাংলা থেকে মৌসুমি বায়ুর অপসারণ শুরু হয় ১১ অক্টোবর নাগাদ। এ বার যে ঠিক ওই সময়েই মৌসুমি বায়ু বাংলা থেকে পাততাড়ি গোটাতে শুরু করবে, সেটা অবশ্য এখনই নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না।’
সুতরাং, মাঝের কয়েক দিন মেঘশূন্য আকাশ এবং বৃষ্টিশূন্য দিন দেখে যাঁরা পুজোয় বৃষ্টির পূর্বাভাসের কথা বেবাক ভুলে গিয়েছিলেন, তাঁদের যেন নতুন করে সতর্ক করে দিতেই মঙ্গলবার বিকেলে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ মেঘের সঞ্চার হলো দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে।