• রেডিও যেন জীবনসঙ্গী চোপড়ার সুবল গোপের
    বর্তমান | ০২ অক্টোবর ২০২৪
  • মুতাহার কামাল, চোপড়া: রেডিও নয়, যেন জীবনসঙ্গী। একটা সময় গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে মহালয়ার চণ্ডীপাঠ শোনার একমাত্র মাধ্যম ছিল রেডিও। এখন ফাইভ জির যুগে রেডিওর কথা ভুলে যাওয়ার উপক্রম। তবে, হাতেগোনা কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা রেডিও আঁকড়েই মহালয়া কাটান। সেই রেডিওপ্রেমীদের মধ্যে অন্যতম সত্তরোর্ধ্ব সুবল গোপ। এখনও রেডিওয় মহালয়ার চণ্ডীপাঠ, খবর শোনেন। রেডিও যেন তাঁর কাছে পরম বন্ধু। প্রতি বছর আন্তর্জাতিক রেডিও দিবস পালন করতেও বিন্দুমাত্র ভুল হয় না সুবলবাবুর।


    চোপড়ার মাঝিয়ালী অঞ্চলের উচলগছের বাসিন্দা সুবলের কথায়, উত্তরবঙ্গে আকাশবাণী শিলিগুড়ি বেতার কেন্দ্র চালু হওয়ার পর ব্যাপকভাবে চালু হয় রেডিও। প্রথম দিকে কেউ রেডিও কিনলে সেই বাড়িতে ভিড় জমে যেত খবর, গান ও নাটক শুনতে। তখন থেকেই রেডিওর প্রতি প্রেম। যা আজও একইভাবে রয়ে গিয়েছে।


    রেডিও কেনার পর ১৯৭০ সালে সুবলবাবু একটি কবিতাও লিখেছিলেন। যা আজও তাঁর নোটবুকে লেখা। রেডিওর শ্রোতা হিসেবে তিনি দেশের গণ্ডীতে থেমে থাকেননি। বিবিসি, ভয়েস অফ আমেরিকা, রেডিও জাপান, রাশিয়া রেডিও, বাংলাদেশ রেডিওর মতো আন্তর্জাতিক বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত শ্রোতা ছিলেন সুবলবাবু। অনুষ্ঠান বিষয়ক মতামত ও প্রশ্নোত্তর পাঠাতেন ওই বেতার কেন্দ্রগুলির বাংলা বিভাগে। ধীরে ধীরে বিভিন্ন দেশের বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান সূচি, ক্যালেন্ডার এবং বিভিন্ন উপহার সামগ্রী ডাকযোগে পেতে শুরু করেন তিনি। অনেক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পাওয়া উপহার, দেশ-বিদেশের ভাষা শিক্ষার বই ও ডাক টিকিট সযত্নে রেখেছেন শো-কেসে।


    সুবলবাবুর বাড়িতে দেখা গেল বিভিন্ন দেশের বড় বড় খামে তাঁর নামে আসা চিঠি, ক্যালেন্ডার, ভাষাশিক্ষার বই। এক সময় তিনি চিনের বেশকিছু ভাষা রপ্ত করেছিলেন। বয়সজনিত কারণে এখন আর তেমন মনে রাখতে পারছেন না। এভাবেই রেডিওর মাধ্যমে ‘বিশ্বজয়’ করেছেন তিনি। রেডিও প্রেমীদের প্রতি তাঁর বার্তা-রেডিও শুনুন, বিশ্বকে জানুন, রেডিওকে ভালবাসুন ।
  • Link to this news (বর্তমান)