• আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলে হামলা টালিগঞ্জে! আঙুল তৃণমূল কাউন্সিলরের দিকে, এল পাল্টা অভিযোগ
    আনন্দবাজার | ০২ অক্টোবর ২০২৪
  • আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলে তৃণমূল কাউন্সিলরের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ উঠল কলকাতার টালিগঞ্জ এলাকায়। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে কলকাতার ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রত্না শূর নিজেও তাঁদের গায়ে হাত তুলেছেন। করুণাময়ী মোড়ে ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে মধ্যরাতে হরিদেবপুর থানায় বিক্ষোভ দেখান কয়েক জন। কাউন্সিলর অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, তাঁদের মারধর এবং গালাগালি করেছেন আন্দোলনকারীরাই। এই নিয়ে শোরগোল এলাকায়।

    আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাতে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ মিছিল হয়। টালিগঞ্জের করুণাময়ী এলাকাতেও একটি মিছিল হয়। অভিযোগ সেখানে অতর্কিত হামলা করেন কাউন্সিলর এবং তাঁর লোকজন। এক আন্দোলনকারী মহিলা বলেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করছিলাম। হঠাৎ করণাময়ী বাজার এবং সামনের বস্তি থেকে কিছু লোক এল। ঠেলাঠেলি শুরু করল। তার পর প্রচণ্ড মারামারি শুরু হয়। আমি ফেসবুকে লাইভ করতে যাই। আমাকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়।’’ ওই মহিলার সংযোজন, ‘‘রত্না শূর নিজেও হাত তুলেছেন।’’ মিছিলে মহিলা এবং শিশুদের মারধর করার অভিযোগে হরিদেবপুর থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান বেশ কয়েক জন। পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধেও কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ করেছেন তাঁরা। অভিযোগ, মারধর, গন্ডগোলের সময় কর্তব্যরত কয়েক জন পুলিশকর্মীকে পদক্ষেপ করার আবেদন জানালে তাঁরা প্রত্যাখ্যান করেন। এক পুলিশকর্মী বলে দেন, ‘‘আমাদের দায়িত্ব নয়। সামনে সিভিক ভলান্টিয়াররা আছেন। তাঁদের বলুন।’’ আর এক আন্দোলনকারী মহিলা বলেন, ‘‘কাউন্সিলর নিজে হাত তুলছেন আন্দোলনকারীদের উপরে। এর চেয়ে লজ্জার আর কী আছে?’’ তিনি জানান, আরজি কর ঘটনার প্রতিবাদে প্রত্যেক শনিবার পুলিশের অনুমতি নিয়ে মিছিল করছেন তাঁরা। মঙ্গলবার রাতেও একটি মিছিল যাচ্ছিল। কিন্তু আচমকা করুণাময়ী মোড় থেকে কয়েক জন মহিলা ঘিরে ধরে মারধর শুরু করেন। পাশের একটি বস্তি থেকেও কয়েক জন এসে হেনস্থা করেন তাঁদের।

    তবে রত্নার দাবি, তিনি ওই মিছিলের বিষয়ে জানতেন না। গন্ডগোল হচ্ছে দেখে থামাতে গিয়েছিলেন। উল্টে তাঁর উপরই চোটপাট করা হয়। তৃণমূল কাউন্সিলর বলেন, ‘‘আমি তো কিছুই জানতাম না। মারামারি হচ্ছে দেখে ছুটে গিয়েছিলাম। আমি ওই মেয়েদের (আন্দোলনকারীদের) বলেছিলাম, পাশে (সরে) যেতে। উল্টে আমাকে আঙুল তুলে তারা বলল, ‘এ সব কি ঠিক হচ্ছে?’ আমাকে হুমকি দেয়। তখন আমাদের মেয়েরা বলে, ‘কাকে কী বলছেন?’’’ তৃণমূল কাউন্সিলর আরও বলেন, ‘‘ওদের একটাই কথা বলা হয়েছিল, আমাদের ঠাকুর, হোর্ডিং ঢুকবে। রাস্তাটা বন্ধ করবেন না। আমাদের ১০-১২ জন ছিল। দেখতে দেখতে কোথা থেকে এত লোক চলে এল, জানি না!’’ তাঁর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ প্রসঙ্গে কাউন্সিলর বিস্ময়ের সুরে বলেন, ‘‘আমি কী এমন বললাম! ওরাই তো উল্টে মারামারি করল!’’ আন্দোলনকারীরা চ্যালেঞ্জের সুরে বলছেন, ‘‘সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)