অর্ণব দাস, বারাসত: ল্যান্ড পারমিশনের নাম করে ঘুরপথে বারাসত পুরসভার অন্তর্গত প্রায় প্রতিটি পুজো কমিটির থেকে ৫০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। বিনিময়ে রসিদ দেওয়া হচ্ছে একটি খেলাধুলার সংস্থার নামে। বারাসত পুরসভার বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে একাধিক পুজো কমিটি। এদিকে যেমন বাঙালির সেরা উৎসবে উৎসাহ দিতে ও দুর্গোৎসবের সময় অর্থনীতি আরও চাঙ্গা করতে পুজো কমিটিগুলিকে ৮৫ হাজার টাকার অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুৎ দিলে ৭৫ শতাংশ ছাড় দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় তৃণমূল পরিচালিত বারাসত পুরসভার এই টাকা আদায় একাধিক প্রশ্ন তুলছে।
জানা গিয়েছে, জেলা সদর বারাসতের বড়-ছোট মিলিয়ে দুর্গাপুজোর সংখ্যা কমবেশি ৩২৪টি। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি পুজো কমিটিকে পুলিশ, বিদ্যুৎ, ফায়ার সার্ভিস-সহ মহকুমাশাসকের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার পাশাপাশি ল্যান্ড পারমিশনের জন্য পুরসভা থেকে অনুমতি নিতে হয়। অভিযোগ, বারাসত পুরসভা থেকে এই ল্যান্ড পারমিশন নিতে গেলে বারাসত সাব ডিভিশন স্পোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের একটি ৫০০ টাকার রসিদ লাইসেন্স দপ্তর থেকে ধরিয়ে টাকা নেওয়া হচ্ছে। গত বছরও খেলাধুলোর ওই সংস্থার নামে ২০০ টাকা নেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ।
বারাসতের অন্যতম বড় পুজো চারের পল্লি সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির কর্মকর্তা রাহুলনাগ চৌধুরি জানিয়েছেন, “এ ভাবে ডোনেশনের নাম করে টাকা নেওয়ার কোনও এক্তিয়ার পুরসভার নেই। এছাড়াও ওই খেলাধুলার সংস্থার সঙ্গে পুজোর কোনও যোগ নেই। তবুও লাইসেন্স দপ্তর থেকে সব পুজো কমিটির কাছ থেকেই ৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।” কলোনি মোড় অ্যাসোসিয়েশন পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী দুর্গোৎসবের জন্য ঢালাও সুবিধা দিচ্ছেন। অনুমতির জন্য কোথাও কোনও টাকা লাগছে না, বিদ্যুৎ বিলেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে। সেখানে ল্যান্ড পারমিশনের জন্য ঘুরপথে ৫০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে কেন? এটা আমরা পুরসভার কাছে জানতে চাই।”
যদিও অভিযোগ প্রসঙ্গে বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় জানান, “ওই সংস্থার নিজস্ব কোনও ফান্ড নেই। মহকুমা স্তরের খেলাধুলোর মানোন্নয়নের জন্য পুজো কমিটির থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। তবে কোনও জবরদস্তি করা হচ্ছে না।” ল্যান্ড পারমিশনের নামে এই টাকা নেওয়া প্রসঙ্গে পার্শ্ববর্তী মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষের বক্তব্য, “পুজোর ল্যান্ড পারমিশনের জন্য শুধু নো অবজেকশন চিঠি দিতে হয়। কোনও টাকা নেওয়া হয় না।”