এই সময়, মালদা: বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে থাকায় এক যুগলকে সালিশি সভায় পিছমোড়া করে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মারধরের ভিডিয়ো নিজের এক্স হ্যান্ডলে আপলোড করে শাসকদলকে কটাক্ষ করায় ঘটনায় রাজনৈতিক রং লেগেছে। মালদার পুখুরিয়া থানা এলাকার মঙ্গলবার রাতের ঘটনা। এর পরে বুধবার ভোরে আবারও সালিশি সভা বসলে পুলিশ ওই যুগলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। মূল অভিযুক্ত পলাতক।
শুভেন্দু যে ভিডিয়োটি (যার সত্যতা যাচাই করেনি ‘এই সময়’) শেয়ার করেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে যে, এক পুরুষ ও এক মহিলার হাত পিছমোড়া করে বাঁধা। এক ব্যক্তি মোটা বাঁশ দিয়ে তাঁদের পিটিয়ে চলেছে। তাঁদের ঘিরে ধরে মারমার বলে চিৎকার করছে জনতা। শুভেন্দুর দাবি, যাকে মারধর করতে দেখা যাচ্ছে, সেই ব্যক্তি তৃণমূলের স্থানীয় নেতা আনোয়ারুল। তবে এই দাবির বিরোধিতা করেছে জেলা তৃণমূল।
মঙ্গলবার রাতে মহিলা ও ওই যুবককে গ্রামে সালিশি সভায় ডেকে পাঠানো হয়। সালিশি সভার খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামে গেলেও স্থানীয় কয়েক জন দূর থেকেই পুলিশকে ভুল বুঝিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। এর পরেই ওই যুগলকে বেঁধে ফেলা হয়। সালিশি সভার হোতা আনোয়ারুল ওই মহিলার শ্বশুরবাড়ির দিকের আত্মীয়।
এই আনোয়ারুলকেই বাঁশ দিয়ে পেটাতে দেখা যাচ্ছে ভিডিয়োতে। মঙ্গলবার রাতভর মারধরের পরে বুধবার রাতে ফের সালিশি সভা বসানোর তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু ততক্ষণে মারধরের ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশেরও নজরে পড়ে। পুখুরিয়া থেকে পুলিশ গ্রামে গিয়ে যুগলকে উদ্ধার করে।
শুভেন্দু এ দিন এক্স হ্যান্ডলে ঘটনার ভিডিয়ো পোস্ট করে লিখেছেন, ‘চোপড়া, আড়িয়াদহ, কোচবিহারের পর এ বার মালদা! তৃণমূল নেতা আনোয়ারুল এক মহিলাকে হাত বেঁধে বাঁশ দিয়ে পেটাচ্ছেন।’ এর পরেই তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘তৃণমূল নেতারা কেন মনে করেন যে, মহিলাদের পেটানোর ব্যাপারে তাঁদের অগ্রাধিকার রয়েছে?’ স্থানীয় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুও একই সুরে শাসকদলকে অভিযুক্ত করে ঘটনার নিন্দা করেছেন।
যদিও তৃণমূল জেলা সভাপতি রহিম বক্সি বলেন, ‘আনোয়ারুল তৃণমূলের নেতা তো দূরের কথা, সাধারণ সদস্যও নন। তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ী। আর ঘটনাটা একেবারেই পারিবারিক। তবুও মহিলাকে মারধর বড় অপরাধ। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে।’ পুলিশ জানিয়েছে, আক্রান্ত দু’জনকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।