• বোলপুর রেলওয়ে ময়দান সর্বজনীনের দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী
    বর্তমান | ০৩ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বোলপুর: বোলপুরের প্রাচীন সর্বজনীন দুর্গাপুজোর মধ্যে অন্যতম রেলওয়ে ময়দান সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি। ১৯৩১সালে ব্রিটিশ শাসনকালে এই পুজো শুরু হয়। বোলপুর শহরে ৩০০-৪০০ বছরের প্রাচীন পারিবারিক পুজোর ইতিহাস রয়েছে। কিন্তু আর্থিক কারণে সেইসময় সর্বজনীন দুর্গাপুজোর প্রচলন ছিল না। তবে জনসাধারণ সেইসমস্ত পারিবারিক পুজোয় স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতে না পারায় অনেকের মন খারাপ থাকত। সেই ভাবনা থেকেই বোলপুরের বেশকিছু বড় ব্যবসায়ী রেলওয়ে ময়দানে বোলপুর সর্বজনীন দুর্গোৎসব নাম দিয়ে এই পুজো শুরু করেন। তবে বর্তমানে শহরে সর্বজনীন পুজো কমিটির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে এর নাম বদলে হয়  বোলপুর রেলওয়ে ময়দান সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি। নাম বদলালেও এখনও একই ধারায় পুজো হয়ে আসছে। প্রতি বছর মহানবমীর দিন দু’বেলা প্রায় ১০হাজার নরনারায়ণ সেবার ব্যবস্থা করা এই কমিটির অন্যতম বিশেষত্ব। বুধবার মহালয়ার দিনে পুজোর উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


    বোলপুর শহরের ঠিক মাঝখানে রয়েছে রেলওয়ে ময়দান। ইংরেজ জমানায় বেশকিছু রেল আধিকারিক ও বড় ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে রেলের জমিতেই ছোট মন্দির তৈরি করা হয়। এই পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন তৎকালীন বিশিষ্ট চিকিৎসক রাধাকৃষ্ণণ। পরবর্তীকালে এই পুজো বড় আকারে করার পিছনে যাঁদের ভূমিকা রয়েছে তাঁদের মধ্যে ব্রজবল্লভ দে, বালেশ্বর ভকত, চিত্ত রক্ষিত ও অনুব্রত মণ্ডল অন্যতম। ২০১৫সালে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ করে বিশাল মন্দির তৈরি করে এই কমিটি। 


    এই পুজোর ইতিহাসও বেশ চমকপ্রদ ও ঘটনাবহুল। কমিটির সম্পাদক সুনীল সিং ও কোষাধ্যক্ষ সুব্রত ভকত বলেন, একসময় এই পুজোয় বন্দুকের গুলি ছুড়ে মহাষ্টমীর ক্ষণের বলিদান হতো। প্রতি বছর বন্দুক কে চালাবে তা নির্দিষ্ট করে দিত কমিটি। কিন্তু ১৯৮৬সালে বলিদানের ঠিক আগের মুহূর্তে কে বন্দুক চালাবে, তা নিয়ে ক্লাবের দুই সদস্যের মধ্যে বচসা শুরু হয়। দুই বন্ধুর মধ্যে বন্দুক নিয়ে কাড়াকাড়ি চলতে থাকে। আচমকা বন্দুকের ঘড়ায় হাত পড়ে গেলে সেই গুলিতে এক সদস্যের মৃত্যু হয়। আচমকা এই ঘটনায় সবাই হতচকিত হয়ে পড়েন। উৎসবের মাঝে এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। ‌তারপরই বন্দুক চালানোর প্রথা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিবর্তে মহাষ্টমীর ক্ষণে মাসকলাই বলি শুরু হয়। পুজো কমিটির সভাপতি মুর্শেদ নেওয়াজ খান বলেন, মহানবমীর দিন দু’বেলা প্রায় ১০ হাজার মানুষকে পাত পেড়ে খাইয়ে নরনারায়ণ করা সেবা হয়। বেশ কয়েক বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী আমাদের পুজো উদ্বোধন করছেন। আমরা তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।
  • Link to this news (বর্তমান)