• কৃষ্ণনগরে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ টোটো চালকদের বিরুদ্ধে
    বর্তমান | ০৩ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: পুজোর এসে গিয়েছে। এরই মধ্যে উৎসবের মরশুমের অজুহাতে কৃষ্ণনগর শহরে শুরু হয়েছে টোটো চালকদের ‘জুলুম’। যাত্রীদের থেকে বেপরোয়া ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। হঠাৎ করেই কৃষ্ণনগর শহরে টোটোর ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যে ভাড়া আগে ১০টাকা ছিল সেটাই এখন ১৫টাকা হয়ে গিয়েছে। টোটোর যে দূরত্বের ভাড়া ১৫টাকা ছিল সেটাই হয়ে গিয়েছে ২০টাকা। কৃষ্ণনগর শহরের ভিতরে টোটো চালকদের এইভাবে ভাড়া বৃদ্ধিতে অতিষ্ঠ আমজনতা। শুধু তাই নয়, একজন যাত্রী হলে ৩০টাকা পর্যন্ত ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। সেই যাত্রী যত কম দুরত্বই যাক না কেন মোটা অঙ্কের ভাড়া দিতে হচ্ছে। শহরের ভিতরে যাতায়াত করার জন্য অন্যতম এই বাহনের ভাড়া বৃদ্ধিতে সমস্যা পড়েছেন সাধারণ মানুষ। কৃষ্ণনগর শহরের ভিতরে সাধারণ মানুষের চলাচল করার অন্যতম পরিবহণ মাধ্যম হল এই টোটো। বাজারঘাট করা থেকে শুরু করে পুজোর কেনাকাটা সবটাই হয় টোটোর ভরসায়। এক দোকান থেকে অন্য দোকান যাওয়ার জন্য টোটোই ব্যবহার করেন শহরবাসী। তাই আমজনতার জীবনযাত্রার সঙ্গে টোটো ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু সেই টোটোর এইভাবে ভাড়া বৃদ্ধিতেই সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। কারণ জানতে চাইলে টোটো চালকদের দাবি, পুজোর জন্য ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। যদিও কার অনুমোদনে এইভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করা হল তার উত্তর নেই। কারণ টোটোর রেজিস্ট্রেশন না থাকার কারণে তার কোনও ইউনিয়ন ভিত্তিক নিয়ম নেই। ভাড়া বৃদ্ধি করলে কেউ বলার থাকে না। সবটাই নির্ভর করে টোটো চালকদের মন মর্জির উপর। টোটো চালকদের প্রকাশ্যে জুলুমবাজি দেখা গেলেও কার্যত ‘অন্ধ’ হয়েই থাকতে হচ্ছে প্রশাসনকে। জানা গিয়েছে, বউবাজার থেকে জেলাশাসক অফিসের ভাড়া ছিল ১৫টাকা। সেটাই এখন বেড়ে হয়েছে ২০টাকা। কিছুদিন আগেও কৃষ্ণনগর রেলস্টেশন থেকে কৃষ্ণনগর পোস্ট অফিস মোড় পর্যন্ত টোটোর ভাড়া ছিল ১৫টাকা। তা এখন ২০টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। একইভাবে পোস্ট অফিস মোড় থেকে জেলাশাসকের অফিস যাওয়ার ভাড়াও ১৫টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ থেকে ২৫টাকা নিচ্ছে টোটো চালকরা। বউবাজার থেকে পাত্রবাজার কিংবা চ্যালেঞ্জ মোড় যেতে আগে ১০টাকা চাইত টোটো চালকরা। কিন্তু এখন সেটাই ১৫টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ টোটো চালকদের যাতায়াতের দূরত্ব কমালেও ভাড়া বেড়েছে। কৃষ্ণনগর শহরের মূলত বউবাজার, সদরের মোড়, ফোয়ারার মোড়, পোস্ট অফিস মোড়, চ্যালেঞ্জ মোড়েই জামাকাপড়ের দোকান রয়েছে। ঘুরে ঘুরে কেনাকাটা করার জন্য অনেকেই বউ বাজারের শপিং মল থেকে বেরিয়ে পোস্ট অফিস মোড়ের শাড়ির নামী দোকানে যাচ্ছে। কিন্তু টোটোর ভাড়া বৃদ্ধির জন্য মোটা টাকা খসাতে হচ্ছে। পোস্ট অফিস মোড়ে কালীগঞ্জ থেকে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন মৌমিতা ঘোষ। তিনি বলেন, প্রতিবছর পুজোতে কৃষ্ণনগরে কেনাকাটা করতে আসি। টোটো করেই বিভিন্ন দোকানে ঘুরি। দোকানগুলি খুব কাছাকাছি। যার জন্য গতবছর ১০টাকা করে ভাড়া নিত। এখন এসে দেখছি সেই ভাড়াই ১৫টাকা হয়ে গিয়েছে। একটু দূর হলেই ১০টাকার ভাড়া ২০টাকা হয়ে যাচ্ছে। ভাড়া না দিতে চাইলে টোটো চালকরা ঝামেলাও করছে।কৃষ্ণনগর শহরে বাসিন্দা তন্ময় পাল বলেন, প্রশাসন টোটো নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু শুনলাম বিভিন্ন সংগঠন তাতে নাকি আপত্তি জানিয়েছে। অথচ সেই সংগঠনের লোকেরাই টোটোর উৎপাত নিয়ে অভিযোগ করে ব্যক্তিগত পরিসরে। টোটোর সংখ্যা কমানো গেলে ভাড়া নিজে থেকেই কমে আসবে। টোটো চালক মলয় দাস বলেন, ভাড়া যা ছিল আছে। পুজোর জন্য হয়তো বেশি ভাড়া চাইছে।
  • Link to this news (বর্তমান)