নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মহিষাসুরমর্দিনীর রূপকার বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র আজ মিথ হয়ে গিয়েছেন। পুজোর সময় মণ্ডপে মণ্ডপে চলে তাঁর চণ্ডীপাঠ। বিশেষ করে মহালয়ার দিন তাঁকে নিয়ে চলে নানা চর্চা। বুধবার মহালয়ার দিন উত্তর কলকাতার রামধন মিত্র লেনে তাঁর বাড়ির সামনে ছিল অনুরাগীদের ভিড়। তাঁর বাড়ি ও মূর্তির সামনে দিনভর ছিল সেলফি তোলার আগ্রহ। তাঁদের বক্তব্য, ‘পুজো একেবারে দোরগড়ায়। তাই মহালয়ার দিন কলকাতায় কিছু কেনাকাটা করতে এসে এই মানুষটির বাড়ি দর্শন করে গেলাম। এমন দিনে এই মানুষটির কথা বার বার মনে পড়ে।’ নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা তাঁর বাড়ির সামনে এসে সেলফি তুলেছেন। একটু দূরে তাঁর মূর্তির সামনে দাঁড়িয়েও সেলফি তোলার ভিড় নজরে পড়েছে। কেউ কেউ বাড়ির একটি খোলা জানলা দিয়ে ঘরের ভিতরে উঁকিঝুঁকি মারেন। সেখানেই কথা হচ্ছিল নিউটাউনের বাসিন্দা সৌম্যজিৎ দাস নামে এক যুবকের সঙ্গে।
তাঁর কথায়, ‘বহুদিন ধরে ইচ্ছা ছিল বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের বাড়িটি দেখার। কিন্তু নানা কারণে তা হচ্ছিল না। এদিন সকালে শ্যামবাজারে এসে বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞাসা করে এখানে এসে পৌঁছই। স্মৃতি হিসেবে বাড়িটির ছবি মোবাইল ফোনে বন্দি করে রাখি। সেলফিও তুলি।’ চন্দননগর থেকে এসেছিলেন তনিমা সেনগুপ্ত ও অসীমা পাল। ওই দুই তরুণী বলেন, এদিন সকাল সকাল বেরিয়ে পড়েছি। পুজোর কিছু কেনাকাটা বাকি ছিল, তা শেষ হল। কুমোরটুলি ঘাট দেখার দীর্ঘদিন ইচ্ছা ছিল। সেটা দেখে বীরেন্দ্রকৃষ্ণের বাসভবনটি দেখে গেলাম। ভালো লাগল।’ বিধান সরণির বাসিন্দা গৃহবধূ পূজা রায় বলেন, ‘মাঝেমধ্যে এই পথ দিয়ে যাই। কিন্তু মহালয়ার এই বিশেষ দিনটিতে একবারের জন্য হলেও এখানে আসি। তাঁর আবক্ষ মূর্তিতে প্রণাম করি।’
কেউ কেউ অভিযোগ করলেন, এই বিশেষ দিনে তাঁরই নামাঙ্কিত ফলক ও আবক্ষ মূর্তিতে কোনও ফুল‑মালা পড়ল না, এটা খুব বেমানন লাগছে। তাঁদের কথায়, ‘মহালয়ার ভোরে যাঁর গলার চণ্ডীপাঠ শুনলে একটা আলাদা নষ্টালজিয়ার সৃষ্টি হয়, সেই মানুষটির কেন এই বিশেষ দিনে ‘ব্রাত্য’ থেকে যাবেন?’