ব্ল্যাকস্পট ভিআইপি রোড ও বিশ্ব বাংলা সরণি, অ্যাক্সিডেন্ট নিয়ে চিন্তায় সরকার
এই সময় | ০৩ অক্টোবর ২০২৪
এই সময়: সল্টলেকের ব্রডওয়ে, করুণাময়ী মোড়, সিটি সেন্টার ক্রসিং, বিডি ব্লক বাসস্টপ, টেকনোপলিস মোড়, কলেজ মোড় এলাকা এতদিন দুর্ঘটনাপ্রবণ জায়গা হিসেবে চিহ্নিত ছিল। গত বছর থেকেই সেই তালিকায় উঠে এসেছে ভিআইপি রোড এবং বিশ্ব বাংলা সরণি। ২০২৩ থেকে ২০২৪-এর ৩০ জুন পর্যন্ত বিধাননগর কমিশনারেটের আওতাধীন এলাকার মোট দুর্ঘটনার ৪৯ শতাংশই ঘটেছে এই দুই রাস্তাতে।পাশাপাশি, গত বছরের তুলনায় বেড়েছে পথ দুর্ঘটনার সংখ্যাও। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ পর্যন্ত ৩৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সেখানে ওই একই সময়ে এই বছর ৪৩টি দুর্ঘটনা ঘটেছে বলেই ট্র্যাফিক বিভাগ সূত্রে খবর। সম্প্রতি, রাজ্যের মুখ্যসচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকাও বিধাননগরের দুর্ঘটনা বাড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দুর্ঘটনাপ্রবণ ব্ল্যাকস্পটগুলিতে কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, সে প্রশ্নও তুলেছে নবান্ন। বর্ষার সময়ে রাস্তার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। এই সময়ে যাতে দুর্ঘটনা না বাড়ে, সে জন্য সতর্কতা অবলম্বনের কথা জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার মুকেশ কুমার বলেন, ‘আগের তুলনায় দুর্ঘটনার হার কমেছে। আরও যাতে কমে, সেজন্য সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কর্মসূচিতে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে।’
কেন ভিআইপি রোড বিশ্ব বাংলা সরণিতে বাড়ছে দুর্ঘটনা?
ট্র্যাফিক পুলিশের একাংশের বক্তব্য, অফিস টাইমে গাড়ির চাপ এত বেশি থাকে যে, ভিআইপি রোডে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বেশি সময় দিতে হচ্ছে। ফলে ট্র্যাফিক আইন অমান্য করলেও সব সময়ে গাড়ি আটকানো সম্ভব হয় না। পাশাপাশি শহরের অন্য রাস্তার তুলনায় এই রাস্তা দু’টি অনেকটাই চওড়া। ফলে, চালকরাও ভিআইপি রোড এবং বিশ্ব বাংলা সরণিতে জোরে গাড়ি চালাতে গিয়ে হামেশাই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন বলেই এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই সব রাস্তায় দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চালকদের গাফিলতির পাশাপাশি নজরদারির খামতির কথাও উঠে আসছে। রাতের শহরে ট্র্যাফিক পুলিশ যে সংখ্যায় মজবুত থাকা প্রয়োজন, তা থাকে না। এই পরিস্থিতি বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় দুর্ঘটনা ঠেকাতে সব ট্র্যাফিক গার্ডের কর্তাদের বাড়তি সতর্কতা নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার মুকেশ কুমার।
ওই রাস্তা নিয়ে নিত্যদিন যাতায়াত করেন লেকটাউনের বাসিন্দা পায়েল চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, ‘ভিআইপি রোডে বিভিন্ন প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের কে আগে তুলবে তা নিয়ে বাস চালকদের রেষারেষি রোজকার ঘটনা। এই রেষারেষির জন্য মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে।’
পুলিশের বক্তব্য, দুর্ঘটনা ঠেকাতে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্পিড লিমিটারের সংখ্যা বাড়ানো হবে—এমনটাই ঠিক হয়েছে। এ ছাড়া, চলবে প্রচার কর্মসূচি। ট্র্যাফিক বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘রাতের দিকে দুর্ঘটনা বেশি তাই কর্মীদের চেকিং বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়ম ভাঙলেই সংশ্লিষ্ট চালকদের জরিমানার পাশাপাশি, তিন মাসের জন্য বাতিল করা হচ্ছে ড্রাইভিং লাইসেন্সও।’