ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে ফিরতে চাইছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। বুধবার ধর্মতলায় সমাবেশে জুনিয়র ডাক্তার ও প্রবীণ চিকিৎসকদের বক্তব্য থেকে স্পষ্টতই এই ইঙ্গিত মিলেছে। মুখরক্ষার সূত্র বের করার চেষ্টা চলছে। এনিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টোয় বৈঠকে বসতে চলেছেন সিনিয়র ও জুনিয়র ডাক্তারা। আর জি কর হাসপাতালের প্ল্যাটিনাম জুবিলি ভবনে বৈঠক হবে।
এদিন জুনিয়র ডক্টরস’ ফ্রন্টের মিছিলে মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা হাজির ছিলেন। জনসাধারণের মনোভাব বুঝে তাঁরা সকলেই কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার পক্ষে মত দেন। জেলার মেডিক্যাল কলেজগুলি এ দফায় কার্যত কর্মবিরতিতে যোগ দেয়নি। বর্ধমান, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, উত্তরবঙ্গ, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার মেডিক্যাল কলেজগুলিতে জুনিয়র ডাক্তাররা কাজ করছেন। তাঁরা জরুরি পরিষেবা ও ইন্ডোর রোগীদের চিকিৎসা করছেন। আগামী এপ্রিলে পিজিটি তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা রয়েছে। ৮০ শতাংশ উপস্থিতি না থাকলে এনএমসি-র ক্লিয়ারেন্স পেতে সমস্যা হবে। পরীক্ষায় বসা যাবে না। এই বিষয়টিও জুনিয়র ডাক্তারদের বিবেচনায় রয়েছে। আবার সর্বত্রই হাসপাতালে রোগীদের দিক থেকেও প্রবল চাপ আসছে। চাপ আসছে নিজেদের পরিবার থেকেও। সব মিলিয়ে ত্রিশঙ্কু অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে কাজে ফিরতে চাইছে জুনিয়র ডাক্তারদের বড় অংশই। তাঁদের আন্দোলনে সাধারণ মানুষের আগ্রহ হারিয়ে যাওয়াও ভাবাচ্ছে জুনিয়র ডাক্তারদের।
কর্মবিরতি তুলে নেওয়া নিয়ে অতিবাম সংগঠন ও এসইউসি-র মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের মধ্যে মতানৈক্যও স্পষ্ট। কর্মবিরতির নামে রোগী পরিষেবা বন্ধ রেখে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে মরিয়া বাম সংগঠনগুলি। উলটোদিকে এখনই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে ফিরতে চাইছেন জুনিয়র ডাক্তারদের বড় অংশ। এমনকী জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে দেবাশিস হালদারের বক্তব্য থেকেও এই অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে। দেবাশিস বলেছেন, “কর্মবিরতির পথ থেকে ফিরে আসব মানুষের জন্য। ফিরে আসব মানুষের জন্যই। কিন্তু আন্দোলন জারি থাকবে।” প্রবীণ চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণও এদিন বলেন, “সবাইকে নিয়ে আন্দোলন করতে গেলে সবার আগে মানুষের স্বার্থকে গুরুত্ব দিতে হবে।” প্রায় একইরকম বক্তব্য রেখেছেন কিঞ্জল নন্দও। কিঞ্জলের কথায়, “শুধু ডাক্তার নয়। রোগীদের নিরাপত্তার জন্যই আন্দোলন। আমরাও চাই কাজে ফিরতে।”
বৃহস্পতিবার এইসব বিষয় নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে সিনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক হবে। ওই বৈঠক থেকে জুনিয়র ডাক্তাররা মুখরক্ষার কোনও সূত্র বের করার চেষ্টা করবেন। সেই সূত্র ধরেই কর্মবিরতি তুলে নেওয়া হতে পারে।