রাত থেকে বাঁশদ্রোণী থানার সামনে ধরনা, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করল পুলিশ
প্রতিদিন | ০৩ অক্টোবর ২০২৪
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: রাত পেরিয়ে সকাল। এখনও বাঁশদ্রোণী থানায় ধর্নায় বসে বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়(Roopa Ganguly)। বুধবার জেসিবির ধাক্কায় পড়ুয়ার মৃত্যু এবং বিজেপি কর্মীদের গ্রেপ্তারির প্রতিবাদে ধরনায় বসেন রূপা। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ মূল অভিযুক্তদের পালাতে সাহায্য করেছে। রাত থেকে ধরনার পর সকালে রূপাকে গ্রপ্তার করেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে বিজেপি নেত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর।
মহালয়ার সকালে নবম শ্রেণির পড়ুয়া সৌম্য শীল সাইকেল নিয়ে পড়তে যাচ্ছিল। পিছন থেকে আসা একটি জেসিবিকে যাওয়ার জন্য রাস্তা ছেড়ে পাশে দাঁড়ায়। দীনেশ নগর অটো স্ট্যান্ডের সামনে একটি গাছের গোড়ায় দাঁড়িয়েছিল সে। পে লোডার বা জেসিবিটি যাওয়ার সময় পড়ুয়াকে ধাক্কা মারে। গুরুতর জখম অবস্থায় রাস্তাতেই লুটিয়ে পড়ে। তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করা হয়। নিয়ে যাওয়া হয় বেসরকারি হাসপাতালে। নবম শ্রেণির পড়ুয়াকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাঁশদ্রোণী।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত ১৫ বছর ধরে বেহাল দশা রাস্তার। কখনও অর্ধেক কাজ হয়। সব টাকা নিয়ে চম্পট দেয় ঠিকাদাররা। ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনীতা কর মজুমদারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই একদল লোক রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। দুটি পে-লোডারে ভাঙচুর চালানো হয়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ। পরিস্থিতি উত্তপ্ত দেখে পাটুলি থানার ওসিও ঘটনাস্থলে আসেন। পাটুলি থানার ওসিকে টানতে টানতে নিয়ে যায় বিক্ষোভকারীরা। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় জলকাদার মধ্যে ওসিকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রেখে বিক্ষোভ চলে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতেই ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। হিংসায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এঁদের মধ্যে একজন বিজেপি কর্মীকে ধরা হয়েছে বলে অভিযোগ করে রাতে পাটুলি থানায় অবস্থান শুরু করেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ ও অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। বিজেপি কর্মীরাও থানায় এসে বিক্ষোভ দেখায়। রাত পর্যন্ত এই নিয়ে অশান্তি চলে। শেষে ধরনায় বসে পড়েন রূপা।
এই ঘটনা নিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, ওই এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা খারাপ ছিল। খোঁড়াখুঁড়ি চলছিল। সেই সময় এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। যারা দায়ী তাদের নিশ্চয় শাস্তি হবে। দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানাম মেয়র। পুলিশ ও পুরসভা পদক্ষেপ নিলেও বিজেপি রাতভর বিক্ষোভ। ঘটনায় বাঁশদ্রোণী থানায় তিনটি আলাদা আলাদা মামলা রুজু করছে পুলিশ। ধৃত পাঁচজনের মধ্যে একজন রুবি দাস মণ্ডল। তিনি ওই ওয়ার্ডেই পুরসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন। দলীয় কর্মী গ্রেপ্তার হতেই নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বাঁশদ্রোণী থানায় যান। থানার সামনে বিক্ষোভ অবস্থান করেন। সকালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।