এই সময়: ভারতীয় রেলের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে বাংলা খাতে অন্তত ৬০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠতেই পারছে না এবং সেই কারণে বাংলায় জমিজটে আটকে রয়েছে রেলের ৬১টি প্রকল্প— বুধবার শিয়ালদহ স্টেশনে রেলের বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করতে এসে এমনটাই মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।কয়েকদিন আগেই শিয়ালদহ স্টেশনের ১ থেকে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের সম্প্রসারণ ঘটানো হয়েছে। এর আগে ওই পাঁচটি প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য যা ছিল, তাতে মাত্র ৯ কামরার ইএমএউ লোকাল দাঁড়াতে পারত। কিন্তু দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির পর এখন প্রতিটা প্ল্যাটফর্মেই ১২ কামরার ট্রেন দাঁড়াতে পারে। এর ফলে শিয়ালদহ থেকে অতিরিক্ত অন্তত তিন লক্ষ যাত্রীর প্রবেশ ও প্রস্থানের পথ সুগম হয়েছে বলে দাবি রেলের। ওই প্ল্যাটফর্মগুলি এ দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রীদের উদ্দেশে তুলে দিয়েছেন রেলমন্ত্রী।
এছাড়া শিয়ালদহ থেকে মুর্শিদাবাদের নসিপুর রেলব্রিজের উপর দিয়ে যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করেন তিনি। উদ্বোধন করা হয় রাধিকাপুর-আনন্দ বিহার টার্মিনাল এক্সপ্রেস ট্রেনেরও। এ দিনের অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারকে তির্যক মন্তব্যে বিঁধতেও ছাড়েননি তিনি। রেলমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলায় যদি যথাযথ কর্মসংস্কৃতি থাকত, তা হলে ভারতীয় রেল এই রাজ্যে অন্তত ৬০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করত।’
রেলমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘কলকাতায় মেট্রোর যে কাজ চলছে, তাতে ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পথের কাজ আটকে আছে জমি সংক্রান্ত সমস্যার জন্য।’ রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা নেই বলেই বাংলা এমন ভাবে বঞ্চিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন অশ্বিনী বৈষ্ণব। পাল্টা রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘বউবাজারে মেট্রোর কাজ করতে গিয়ে পর পর বিপর্যয় হয়েছে। রাজ্য সরকার পাশে না থাকলে ওই প্রকল্প অনেক আগেই বন্ধ হয়ে যেত। তারপরেও রেলমন্ত্রী রাজ্যের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ আনছেন! শহরের মধ্যে মেট্রো একটা করে সমস্যা কাটিয়ে একটু করে এগোনোর পরেই রাজ্যকে ধন্যবাদ জানায় — সেটা সম্ভবত মন্ত্রী জানেন না। উনি ওঁর দপ্তরের খবরই রাখেন না।’
এ দিনের অনুষ্ঠানমঞ্চেই রেলমন্ত্রীর কাছে রাজ্যসভায় বিজেপির সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য অনুরোধ করেন যাতে শিয়ালদহ স্টেশনের নাম বদল করা হয়। তাঁর যুক্তি, ‘দেশভাগের পর যখন লক্ষ লক্ষ মানুষ এই শিয়ালদহ স্টেশনে এসে নেমেছিলেন, তখন যাঁর জন্য আমরা নিজেদের ভারতীয় বলে পরিচয় দিতে পারছি, সেই ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এখানে ক্যাম্প করে সেই মানুষগুলিকে সহযোগিতা করেছিলেন। তাঁদের পাশে থেকেছিলেন। তাই শিয়ালদহ স্টেশনের নামে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে করা হয়।’ যদিও রেলমন্ত্রী এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কিছু জানাননি।