এই সময়, রায়গঞ্জ: স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঠিকা কর্মীদের মারধর করার অভিযোগ উঠল উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার গ্রামীণ হাসপাতালের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ছুটে আসতে হয় পুলিশকে। ইটাহার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক মনুগোরা ফেব্রেট এক্কার বিরুদ্ধে ইটাহার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নিগৃহীত ঠিকাকর্মীরা। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্ত ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।কোল্ড চেন পয়েন্ট থেকে প্রতিটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রসূতি মা ও শিশুদের জন্য ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার জন্য একজন করে ঠিকাকর্মী নিযুক্ত রয়েছেন। ইটাহার ব্লকে ৬২টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য ৬২ জন অল্টারনেটিভ ভ্যাকসিন ডেলিভারি (এভিডি) কর্মী দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। প্রতি সপ্তাহে একদিন করে মাসে মোট ৪ দিন তাঁদের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভ্যাকসিন পৌঁছে দিতে হয়। দূরত্ব অনুযায়ী দিন প্রতি কেউ পারিশ্রমিক পান ৯০ টাকা কেউ তার চেয়ে একটু বেশি।
কিন্তু গত দশ মাস ধরে ইটাহার ব্লকের এভিডি কর্মীরা তাঁদের পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার ৬২টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এভিডি কর্মীরা ইটাহার ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে তাঁদের বকেয়া টাকার দাবিতে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেন। বিক্ষোভ সামাল দিতে ছুটে আসেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক। তিনি বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন বলে অভিযোগ।
এভিডি কর্মীদের অভিযোগ, বকেয়া প্রাপ্য টাকা চাইতে গেলে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ধাক্কা দিয়ে এক মহিলা ও এক পুরুষকর্মীকে মাটিতে ফেলে দিয়ে মারধরও করেন। বিক্ষোভকারী এভিডি কর্মী কৃষ্ণা পাল বলেন, ‘বিএমওএইচ সাহেব আমাদের বুঝিয়ে বলতে পারতেন, কেন টাকা ঢুকছে না। তা না করে তিনি যদি উল্টোপাল্টা কথা বলেন, ধাক্কা মেরে ফেলে দেন, তাহলে পুলিশে যাওয়া ছাড়া উপায় কী আছে।
জানা গিয়েছে, তিন মাস আগে বকেয়া টাকা চেয়ে লিখিত আবেদন করেছিলেন এভিডি কর্মীরা। তখন বলা হয়েছিল, পুজোর আগে অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাবে। পুজো চলে এলেও টাকা না ঢোকায় আজ আন্দোলনে নামেন তাঁরা। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা মারধর ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএমওএইচকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এমনকী হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজেরও উত্তর দেননি। আন্দোলনের জেরে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভ্যাকসিন না পৌঁছনোয় এ দিন ইটাহার ব্লক জুড়ে বন্ধ থাকে ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচি। বিভিন্ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভ্যাকসিন নিতে এসে মা ও শিশুরা ফিরে যায়।