সাহিত্য আকাডেমির অন্তর্গত লিঙ্গুইস্টিক্স এক্সপার্টস কমিটি বাংলা ছাড়াও মারাঠি, পালি, প্রাকৃত এবং অহমিয়া ভাষাকে ক্ল্যাসিক্যাল ল্যাঙ্গুয়েজের তকমা দেওয়ার অনুমোদন জানায় চলতি জুলাই মাসে। সেই অনুমোদনেই শীলমোহর দিল ক্যাবিনেট। এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, 'অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে বাংলা ভাষাকে অবশেষে ভারত সরকার একটি ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিয়েছে। আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়, ভারত সরকার থেকে এই স্বীকৃতি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম এবং আমরা আমাদের পক্ষে গবেষণা ফলাফলের তিনটি খণ্ড জমা দিয়েছিলাম।' তিনি আরও লেখেন, 'কেন্দ্রীয় সরকার আজ সন্ধ্যায় আমাদের সুগবেষিত দাবি মেনে নিয়েছে এবং আমরা অবশেষে ভারতীয় ভাষার মধ্যে সাংস্কৃতিক শীর্ষে পৌঁছেছি।' বাংলার জন্য আলাদা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তিনি লিখেছেন, 'আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে মহান বাংলা ভাষাকে একটি ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে দুর্গাপূজার শুভ সময়ে। বাংলা সাহিত্য বছরের পর বছর ধরে অসংখ্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমি সারা বিশ্বের সকল বাংলা ভাষাভাষীদের অভিনন্দন জানাই।' কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, সমগ্র রাষ্ট্রের দরবারে বাংলা ভাষাকে অন্যতম ধ্রুপদী ভাষা (Classical Language) হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের জন্য ভারতের যশস্বী প্রধানমন্ত্রী মাননীয় @narendramodi মহাশয়কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। সুদীর্ঘকাল ধরে প্রতিটি বাঙালির মাতৃভাষাকে ঘিরে যে স্বপ্ন, তা আজ পূরণ হলো নরেন্দ্র মোদীজীর হাত ধরে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত একজন সাংসদ হিসেবে এবং সর্বোপরি একজন বাঙালি হিসেবে গর্বিত বোধ করছি। আমরা আপ্লুত, গর্বিত!'
ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে সম্মানিত হওয়ার পর কী কী সুবিধা পাবে প্রাণের প্রিয় বাংলা ভাষা? কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের দ্বারা দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার দেওয়া হবে এই ভাষার বিজ্ঞদের। এই ভাষাগুলির সম্পর্কে পড়ার জন্য "সেন্টার ফর এক্সিলেন্স" স্থাপনা করা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভাষাগুলির প্রচার ও প্রসারের প্রয়াস করা হবে। উল্লেখ্য, প্রথম ক্ল্যাসিক্যাল ল্যাঙ্গুয়েজের তকমা দেওয়া হয় তামিল ভাষাকে। তারপর থেকে যথাক্রমে ২০০৫ সালে সংষ্কৃত, ২০০৮ সালে তেলুগু এবং কানাড়া, ২০১৩ সালে মালায়লম এবং ২০১৪ সালে ওড়িয়াকে ক্ল্যাসিক্যাল ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে ভূষিত করা হয়। সামনেই রয়েছে মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন। তাই ভোটের প্রাক্কালে কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।