পুজোর জায়গার অনুমতি (ল্যান্ড পারমিশন) নিতে বারাসত পুরসভায় গিয়ে ৫০০ টাকা করে চাঁদা দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এই চাঁদার যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে বিভিন্ন পুজো কমিটি। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, চাঁদা চাওয়ার সময়ে বলা হচ্ছে, মহকুমার খেলাধুলোর উন্নয়নের জন্য ওই টাকা নেওয়া হচ্ছে। রসিদ দেওয়া হচ্ছে বারাসত সাব-ডিভিশন স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের নামে। যদিও বারাসত পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, পুজোর অনুমতি দেওয়ার সঙ্গে এই চাঁদার কোনও সম্পর্ক নেই।
প্রশাসন সূত্রের খবর, বারাসতে ছোট-বড় মিলিয়ে তিনশোর কিছু বেশি পুজো হয়। উদ্যোক্তাদের অনেকের অভিযোগ, জায়গার অনুমতি নিতে পুরসভায় গেলেই লাইসেন্স বিভাগ থেকে ৫০০ টাকার একটি রসিদ তাঁদের ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গত বছর ওই চাঁদার অঙ্ক ছিল ২০০ টাকা, এমনও জানিয়েছেন তাঁরা। বারাসতের চারের পল্লি সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির এক কর্তা রাহুল নাগচৌধুরী বলেন, ‘‘খেলাধুলোর উন্নতি আমরাও চাই। তবে পুজোর সঙ্গে তার কোনও যোগ নেই। সবাই তো বলতে পারেন না যে, ওই টাকা দেবেন না। আশা করব, আদায় হওয়া টাকা খেলার উন্নতিতে খরচ হবে।’’
বারাসতের আর একটি পুজো, কলোনি মোড় অ্যাসোসিয়েশন পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের পুজো ট্রাস্টের জমিতে হয়। তা-ও অনুমতি নিতে গিয়েছিলাম। তখন ৫০০ টাকার রসিদ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
এই টাকা যে শুধু মহকুমা এলাকায় খেলাধুলোর উন্নতিকল্পে নেওয়া হচ্ছে, তা মেনে নিয়েছেন বারাসতসাব-ডিভিশন স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সহ- সম্পাদক শ্যামসুন্দর চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘বারাসত মহকুমা থেকে বহু ক্রীড়াবিদ উঠে এসেছেন। সেই ক্ষেত্রটিকে আমরা টিকিয়ে রাখতে চাই। কিন্তু আমাদের সেই সঙ্গতি নেই। ফলে বরাবরই আমরা পুরসভার থেকে সহযোগিতা পেয়ে থাকি। পুজো উদ্যোক্তাদের কাছেও হাত পাতি।’’
বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘ওই সংস্থার উদ্যোগে বহু খেলায় আমরা অনুদান দিই। আমার মেয়াদকালের আগে থেকেই ওঁরা পুজো কমিটিগুলির কাছে চাঁদা চেয়ে আসছেন। লাইসেন্স বিভাগের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। হতে পারে, ওখানে কাউন্টারে ওঁদের লোক থাকছেন বিল কাটার জন্য। তবে ওই চাঁদা বাধ্যতামূলক নয়।’’
কিন্তু পুর ভবন চত্বরে এমন ভাবে কি চাঁদা আদায় করা যায়? চেয়ারম্যান জানান, এটা বহু বছর ধরে হয়ে আসছে।