ফিরে এল উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া-কাণ্ডের ছায়া। মঙ্গলবার রাতে মালদহের একটি থানা এলাকায় বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রাখার অভিযোগে এক পুরুষ ও মহিলাকে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে মারধরের অভিযোগ ওঠে। সে ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) সমাজমাধ্যমে ছড়ায়। উত্তর দিনাজপুরের ‘জেসিবি’র মতো মালদহেও ঘটনায় নাম জড়ায় এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত আনারুল হকের। তাঁকে ধরেছে পুলিশ। যদিও আনারুলকে দলের লোক বলে মানেননি তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বক্সী।
মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও অভিযোগ, প্রহৃতদের উদ্ধার না করে ফিরে আসে। বুধবার ওই মারধরের ভিডিয়ো এক্স হ্যান্ডলে দিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী প্রশ্ন তোলেন, ‘‘ইচ্ছে মতো মহিলাদের মারধর করার অধিকার তৃণমূল নেতাদের কে দিয়েছে!’’ এর পরেই পুলিশ গিয়ে ওই মহিলা ও পুরুষকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের তরফে দাবি করা হয়, মঙ্গলবার রাতে মহিলার পরিবার বিষয়টি পারিবারিক এবং নিজেদের মধ্যে মেটানো হবে বলে দাবি করে। কিন্তু এ দিন গোলমাল হতে পারে শুনে দু’জনকে উদ্ধার করা হয়। জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। এক জনকে ধরা হয়েছে।”
ওই মহিলার স্বামী পরিযায়ী শ্রমিক। তিনি এলাকায় নেই। মঙ্গলবার রাতে ওই মহিলার ঘরে ঢুকে অন্য গ্রামের বাসিন্দা এক বিবাহিত ব্যক্তিকে আটক করেন এলাকাবাসী। সেখানেই আনারুল হক তাঁদের লাঠি দিয়ে পেটান বলে অভিযোগ। নির্যাতিতার দাবি, ‘‘যাকে নিয়ে আমাকে বদনাম করা হচ্ছে, তাকে আমি ডাকিনি।’’ আক্রান্ত পুরুষটির দাবি, ‘‘আমাকে ফোন করে ডাকা হয়েছিল।’’
তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি অবশ্য বলেন, “একটা পারিবারিক অশান্তি হয়েছে। আনারুল হক নামে যাঁকে তৃণমূল কর্মী বলা হচ্ছে, তিনি দলের কেউ নন। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। আর এই ঘটনা নিয়ে সমাজমাধ্যমে টুইট করেছেন বিজেপির বিরোধী দলনেতা, যাঁর নাম বলতে ঘৃণা করে। আসলে, বিজেপি রাজ্যকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে।”
মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু পাল্টা বলেন, “সভ্য সমাজে এক জন মহিলা ও পুরুষকে দড়ি দিয়ে বেঁধে পেটানো হচ্ছে— এটা দুর্ভাগ্যজনক। এ ঘটনা দেখিয়ে দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে।”