‘বাঁশদ্রোণীর রাস্তা নিয়ে কারও হেলদেল নেই’, মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে মন্তব্য শুভঙ্করের
আনন্দবাজার | ০৩ অক্টোবর ২০২৪
মহালয়ার দিন সকালে বাঁশদ্রোণীতে পে-লোডারের ধাক্কায় গাছের সঙ্গে পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় নবম শ্রেণির এক ছাত্রের। বুধবারের সেই ঘটনায় উত্তপ্ত হয়েছিল বাঁশদ্রোণী এলাকা। বৃহস্পতিবার মৃত কিশোরের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। তাঁর আক্ষেপ, গত ১০ বছর ধরে বাঁশদ্রোণী এলাকায় রাস্তার বেহাল অবস্থার জন্য নানা ধরনের দুর্ঘটনা ও খারাপ পরিস্থিতির শিকার হয়ে চলেছেন সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর এবং পুরসভার কোনও হেলদোল নেই। এ দিন কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে ছিলেন ছাত্র পরিষদের সভাপতি প্রিয়ঙ্কা চৌধুরী, যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অর্ঘ্য গণ, মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী সুব্রতা দত্ত-সহ অন্য নেতানেত্রীরা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কংগ্রেসের নেতারা গেলে কান্নায় ভেঙে পড়েন ছাত্রের বাবা-মা। চোখের জল ফেলতে ফেলতে ওই ছাত্রের ঠাকুমা বলেন, “আমাদের এই অবস্থার বিচার চাই। আমরা অভিযুক্তদের শাস্তি চাই। আর কিছুই চাই না।” শুভঙ্কর তাঁদের বলেন, “সান্ত্বনা দেওয়ার কোনও জায়গা নেই। বাড়ির ছোট ছেলেটার কথা মাথায় রেখে আপনাদের শক্ত হতে হবে। কোনও রকম রাজনৈতিক পতাকা ছাড়াই আপনাদের সাহায্য আমরা করব। কোনও রকম আইনি সহায়তার জন্য আমরা সব সময় প্রস্তুত।
বুধবার কলকাতা পুরসভার ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁশদ্রোণী এলাকায় নবম শ্রেণির এক কিশোর টিউশন পড়তে যাওয়ার সময় পে-লেডারে পিষ্ট হয়ে মারা যায়। তার পর থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনার পর থেকে নিজের এলাকায় দেখা যায়নি তৃণমূল কাউন্সিলর অনিতা কর মজুমদারকে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে ওই এলাকায় রাস্তা বেহাল। সেখানে খোঁড়াখুঁড়ির কাজও চলছে অনেক দিন ধরে। তার ফলেই বুধবারের দুর্ঘটনা। এলাকায় বিক্ষোভের সময় কয়েক জন বিজেপি কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তারই প্রতিবাদে বাঁশদ্রোণী থানায় গিয়ে ধর্নায় বসেছিলেন প্রাক্তন সাংসদ। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করে। আলিপুর আদালত এক হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। রূপা ছাড়াও আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁদের মামলা এখনও আদালতে বিচারাধীন। অপর দিকে, এ দিন ঘাতক পে-লোডারের চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই চালক পলাতক ছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
যে ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে, তার পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। সূত্রের খবর, যে সংস্থার জেসিবিতে এই দুর্ঘটনা, তারা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং আর্থিক সাহায্যের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের তরফেও আর্থিক সাহায্য করা হতে পারে মৃতের পরিবারকে।